Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
আব্বাস সিদ্দিকী কি পশ্চিমবঙ্গে এআইএমআইএম-র হাত শক্ত করবেন? | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

সম্প্রতি সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (এআইএমআইএম) এর নেতা ও সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি সাহেবের একদিন সাত সকালে হঠাৎ ফুরফুরা শরীফে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর বাড়ির বৈঠকখানায় যাওয়ায় ও তাঁর সাথে “সৌজন্যমূলক” সাক্ষাৎ করায় পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি নয়া তুফান সৃষ্টি হয়েছে। খবরে প্রকাশ যে ওয়াইসি বলেছেন তিনি বাংলার মাটিতে সিদ্দিকী কে, যিনি “ভাইজান” হিসাবে তাঁর অনুগামীদের কাছে পরিচিত, বড় ভাই হিসাবে মেনে চলতে চান। এই ঘটনার পরেই সিদ্দিকীর ওয়াইসির হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গে এআইএমআইএম এর ভিত্তি কে শক্তিশালী করার জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। যে সিদ্দিকীর এক কথায় অসংখ্য অনুগামী রাস্তায় নামেন, সেই সিদ্দিকীর বিরোধিতা শুরু হয় তাঁর ঘাঁটি ফুরফুরা শরীফেই।

পশ্চিমবঙ্গে যাঁর হাত ধরে এআইএমআইএম এর প্রবেশ, সেই ইমতিয়াজ আহমেদ মোল্লা এখন ওয়াইসির সঙ্গ ছেড়ে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল পার্টি (ডিএনপি) গঠন করেছেন। তাঁর সাথে এক কালে এআইএমআইএম করা অনেক মুসলিমরাই আজ চরম ভাবে ওয়াইসি বিরোধী। পিপল’স রিভিউ বাংলা কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মোল্লা জানান যে ওয়াইসির সাথে সিদ্দিকীর হাত মেলানো একটি রাজনৈতিক ভাবে ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত হবে বর্তমান পরিস্থিতিতে। মোল্লা বললেন “এটা আমার কাছে রংতামাশা বলে মনে হচ্ছে, কোন পলিটিক্যাল স্টেপ (রাজনৈতিক পদক্ষেপ) বলে মনে হচ্ছে না”, এবং এআইএমআইএম-এর রাজনৈতিক দৈনতার উপর ক্ষোভ উপড়ে দেন। উনি বলেন “আব্বাস সিদ্দিকী যেখানে সকল বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা, তাঁদের জীবনের কষ্ট-দুর্দশা, সেগুলোর মুক্তি দেওয়ার জন্যে যে ডাক দিয়েছিলেন, হঠাৎ তিনি হায়দ্রাবাদি শাহেনশাহের সাথে কী করে হাত মেলালেন? আর যদি উনি না ডেকে থাকেন তাহলে ওই ভোরবেলায় হায়দ্রাবাদ থেকে একজন সরাসরি এসে আপনার বাড়িতে কী করে উঠলেন? আপনি কি তাঁকে ইনভাইট (আমন্ত্রণ) করেননি?”

পিপল’স রিভিউ বাংলা কে দেওয়া ইমতিয়াজ আহমেদ মোল্লার সাক্ষাৎকার

এই আগমন আর মিলনের ফলে যে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এক প্রভাব পড়েছে তা নিয়ে বলতে গিয়ে মোল্লা বলেন “এই যে আগমন, এই যে মিলন, এই যে সাক্ষাৎ, এইটা কিন্তু পুরো পশ্চিমবাংলার মানুষ কে ভয় পাইয়ে দিয়েছে, আতঙ্কিত করে দিয়েছে, শুধু অমুসলিম না, মুসলিম-অমুসলিম যে গোটা সমাজ যে স্বপ্নটা দেখছিল, যে একটা মহাজোট হবে, সবাই এক জায়গায় আসবে, যত বঞ্চিত মানুষগুলো: সে আদিবাসী হোক, মতুয়া হোক, দলিত হোক, মুসলমান হোক, সবাই যে ভ্রাতৃত্ব বোধে বন্ধন হবে, সেইখানে কিন্তু মিম-কে (এআইএমআইএম) এন্ট্রি দিয়ে, মিম কে তাঁর জায়গায় আপ্যায়ন করে, তাঁর সঙ্গে প্রেস কনফারেন্স করে, এইটা (ওয়াইসির সাথে সিদ্দিকীর মেলবন্ধন) কিন্তু মানুষকে একটা বিরাট ধাক্কা দিল যে গল্পের শুরুতেই এত বড় ডিগবাজি কী করে হয়ে গেল?”

সাহিত্যিক ও সামাজিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত মানিক মন্ডল (ফকির) এর সাথে মোল্লা-র দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দলিত-আদিবাসী মাইনোরিটি আন্দোলন লীগ (দামাল) বেশ কয়েক মাস ধরে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে নমঃশূদ্র, মতুয়া, আদিবাসী ও মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর (এনআরসি) মাধ্যমে আপামর মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। সিদ্দিকী এই প্রয়াসে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন এবং এই মঞ্চের সাথে যুক্ত থেকে মতুয়াদের সাথে মুসলিমদের অভাবনীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রয়াসকে সক্রিয় ভাবে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তাঁর এই ভাবে ওয়াইসির সাথে হাত মেলানো কে ভাল চোখে দেখেনি দামাল বাংলাও। এই রাজনৈতিক সমীকরণের বিরোধিতা করেন মন্ডল।

কলকাতায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু নেতৃবৃন্দ সিদ্দিকীর এআইএমআইএম-এর ওয়াইসির সাথে হাত মেলানোর বিরোধিতা করেন। পশ্চিমবঙ্গে এআইএমআইএম-এর আগমন কে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও তার পরিচালক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ-র (আরএসএস) ধর্মীয় মেরুকরণ করে বাংলা দখলের লড়াইয়ের একটা অংশ হিসাবে দেখছেন বলে জানান। পিপল’স রিভিউ কে পশ্চিমবঙ্গে এআইএমআইএম-এর আর এক প্রাক্তন মুখ খোবেই আমিন, যিনি নিজে একজন পীরজাদা, জানান যে তিনি এই আঁতাতের বিরোধী। আমিন বলেন “যখন বিজেপি কোনো রাজ্য কে টার্গেট করে লড়ে, সেখানেই পৌঁছে যান ওয়াইসি সাহেব। এবং তিনি নরেন্দ্র মোদীর খুব পছন্দের বলেই তিনি এমপি রত্ন পেয়েছিলেন, কেন না হিন্দু মুসলিম ভোটটা কে ডিভাইড (ভাগ) করার সুযোগ করে দেয়। তাঁকে রত্ন হিসাবেই রত্ন দেওয়া হল।” আমিন প্রশ্ন করেন যে ওয়াইসি কে পশ্চিমবঙ্গ আম্ফান দুর্যোগের সময়ে পায়নি, লকডাউনের সময়ে পায়নি, এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনেও পায়নি, তিনি তাহলে ভোটের কয়েক মাস আগে কেন পশ্চিমবঙ্গে উদয় হলেন?

আমিন এআইএমআইএম-এর রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা নিয়ে বলতে গিয়ে প্রশ্ন তোলেন, “ওনার (ওয়াইসি-র) এলাকায় মসজিদ ভাঙা হচ্ছে সেখানে উনি লড়াই করেন না, কথা বলেন না; আর বাংলায় এসে মুসলমানদের ডেভেলপ (উন্নয়ন) করবে(ন)?” নিজের এআইএমআইএম-এর অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গিয়ে উনি বলেন “আমি ওয়াইসি সাহেব কে ভালবাসতাম, ওয়াইসি সাহেবের ভাবমূর্তি ভাল লেগেছিল। কিন্তু যত ভিতরে ঢুকেছি, যাঁচাই করেছি, দেখতে পেয়েছি এগুলো প্রব্লেম (সমস্যা) দেখা দিয়েছে। অতএব সেই জায়গায় আমরা বিরোধিতা করছি এবং ময়দানে নেমে বিরোধিতা করতে হলেও আমরা করবো”।

সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন “গুজরাট থেকে এসে যদি ধর্মের নামে বাঙালিদের কে ভাগ করতে চায়, বাঙালিদের অস্তিত্ব কে বিলীন করতে চায়, আমরা বাঙালিরা বুকের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে বাংলার সত্ত্বা কে জাগ্রত করে প্রতিষ্ঠিত করবো। ঠিক তেমনি ভাবেই হায়দ্রাবাদ থেকে কেউ এসে বাঙালি মুসলিমদের আবেগ আর জজবা নিয়ে খেলা করে, আর বাঙালির সত্ত্বা কে ভাগ করতে চায়, আমরা বাঙালিরা আমাদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে এর প্রতিবাদ করবো। ধর্ম নিয়ে কখনো কেউ খেলবেন না”। উনি আরো বলেন “বাঙালি মুসলিমদের, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের, কোন পীরজাদা, কেউ আমাদের নেতা নন”। অল বেঙ্গল ইমাম এসোসিয়েশন এর ইয়াহিয়া খান এই সাংবাদিক সম্মেলনে “হিন্দু-মুসলিম” বিভেদের রাজনীতির সমালোচনা করেন ও বলেন “আমরা এর মধ্যে নেই”।

এই ভাবে গোটা মুসলিম সমাজে সমালোচিত হয়ে নিজের অবস্থান, বিশেষ করে এআইএমআইএম-এর আঁচলে আশ্রয় খোঁজার রাজনৈতিক পদক্ষেপ, নিয়ে চিন্তিত দেখালেন পীরজাদা সিদ্দিকী। যদিও তিনি এখনো এআইএমআইএম-এর সাথে সরকারিভাবে জড়িত হননি তাহলেও তাঁর বাড়িতে ওয়াইসির আগমন ও তাঁদের বৈঠক নিয়ে জলঘোলা যথেষ্ট হচ্ছে। হতে পারে চাপে পড়ে সিদ্দিকী এআইএমআইএম নিয়ে তাঁর অবস্থান ত্যাগ করবেন। তবে যেহেতু রাজনৈতিক ভাবে পীরজাদা “ভাইজান” এই মুহূর্তে চরম ভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছেন নিজের প্রতিপত্তি খাটিয়ে একটি রাজনৈতিক পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করতে তাই তিনি যে সহজে পশ্চিমবঙ্গের বাকি মুসলিম নেতৃত্বের কথা শুনবেন সে কথা মনে হয় না। তবে সিদ্দিকীর এআইএমআইএম যোগ দেওয়া যে বিজেপি ও আরএসএস কে ব্যাপক অমুসলিম, বিশেষ করে হিন্দু ও নমঃশূদ্র মানুষের মেরুকরণ করতে সাহায্য করবে নির্বাচনের আগে সেটা কিন্তু স্পষ্ট। আর এর ফলে সবচেয়ে আঘাত খাবে ঐক্যবদ্ধ নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়াসটা।

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla