Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the schema-and-structured-data-for-wp domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
করোনা সঙ্কটে রাষ্ট্র কেন উধাও হয়ে গেল? | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

ভারতবর্ষের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এক বীভৎস আকার নিয়েছে। সংবাদপত্র থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যম ঘাঁটলেই চোখে পড়ছে সাধারণ মানুষের দুর্দশা। অক্সিজেনের অভাবে, ওষুধের অভাবে, হাসপাতালে শয্যার অভাবে, অসংখ্য মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের জন্যে নির্দিষ্ট করা শ্মশান আর কবরখানায় পা ফেলার জায়গা নেই। দেশী ও বিদেশী মূলধারার সংবাদ মাধ্যমে এই নিয়ে খুব সমালোচনা চললেও ভারতের রাষ্ট্রযন্ত্র, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মোসাহেবদের সরকার কিন্তু নির্লিপ্ত ভাবে, চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়ে হয় সমস্যাটি কে এড়িয়ে যাচ্ছে আর না হয় খাটো করে দেখাচ্ছে। জনতার জীবনে এত বড় একটা স্বাস্থ্য সঙ্কটের সময়ে কিন্তু নির্লিপ্ত রাষ্ট্রের উদাসীনতা আর অনুপস্থিতি সন্দেহ সৃষ্টি করছে। করোনাকালে কী চাইছে রাষ্ট্র? 

আপনি যদি কোন হাসপাতালের বাইরে যান বা কয়েক ঘন্টা সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে দেখেন তাহলে দেখবেন কী ভাবে গোটা রাজ্য জুড়ে, গোটা দেশ জুড়ে মানুষ অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্যে, ওষুধের জন্যে, হাসপাতালে একটা শয্যার জন্যে হাহাকার করছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ গরিব মানুষ হলেও অনেক ধনী ও সাবর্ণ মধ্যবিত্তরাও এই বার আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল, অক্সিজেন বা ওষুধের খোঁজে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদী টেলিভিশনে মুখ দেখিয়ে নিজের দায়িত্ব সারছেন, তাঁর দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কিন্তু মাঠে নেমে মানুষের সহযোগিতা করা দূরের কথা, সমস্যাটার অস্তিত্বই স্বীকার করছে না। পশ্চিমবঙ্গ সহ পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন শেষ যে।  

উত্তর প্রদেশ জুড়ে যখন অক্সিজেন ও হাসপাতালে শয্যার জন্যে, শ্মশান আর কবরস্থানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্যে মানুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন একে অপরের সঙ্গে, ঠিক সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, যিনি মোদী-র যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে নিজের স্থান অধিগ্রহণ করেছেন বিজেপিতে আর বাংলা কে “সুনার বাংলা” বানাবার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে গিয়েছিলেন কিছুদিন আগে এসে, ঘোষণা করেছেন যাঁরা রাজ্যে অক্সিজেন বা হাসপাতালে শয্যার অভাব নিয়ে সরব হবেন, তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। সেই রাজ্যে এর আগেও মানুষ গণআন্দোলনে শরিক হওয়ায় তাঁদের সম্পত্তি বেআইনি ভাবে বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করে যোগী সরকার। এইবার এই নতুন বিধান। ঠিক এই ভাবেই গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটকের মতন রাজ্যে মানুষ কে ভয় দেখিয়ে করোনা পরিস্থিতি ও মৃত্যুর হার নিয়ে চরম মিথ্যা কথা বলছে বিজেপি নেতৃত্ব।  

তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার——যদিও আশ্চর্যজনক মোটেই না——হল এই যে এই সঙ্কট কালে যারা অভিযোগ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হলেও সামগ্রিক ভাবে মানুষের চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করা থেকে সুষ্ঠু ভাবে মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার দায়িত্ব কিন্তু রাষ্ট্র নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে। বিজেপি সমস্ত বৃহৎ কর্পোরেট-মালিকানাধীন মূলধারার সংবাদমাধ্যম গুলো কে মোদী সরকার কে সমালোচনা করতে মানা করার সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার মানুষদের কন্ঠরোধ করতে চাপ দেয় কোম্পানিগুলো কে। কিন্তু এই সরকার কে তৃণমূলস্তরে, ব্যবস্থা ঠিক করতে কোথাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।

একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই রকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হলে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত সমস্যার সমাধান করা। রোগীদের পরীক্ষা করা, ভর্তি করা, ওয়েটিং লিস্ট বানিয়ে সুষ্ঠু ভাবে শয্যা বণ্টন করা, রোগী সংখ্যার হিসাবে অক্সিজেন বণ্টন করা থেকে রিফিল করানো, ওষুধের যোগান রোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া, ব্লক বা ওয়ার্ড স্তর থেকে একেবারে রাজ্য স্তর অবধি একটা ইমারজেন্সি ব্যবস্থা তৈরি করা, প্রভৃতি পদক্ষেপের মাধ্যমে মানুষ কে এই কঠিন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা করা হল একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাজ। এই কাজ করতে গেলে তাকে যদি সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হয়, তাহলে সে তাই করবে। নিজের দায়িত্ব জনতার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে ভাষণ দেওয়া তার কাজ না।

অথচ আজ ভারতবর্ষে আমরা কী দেখছি? ভারত রাষ্ট্র, মোদী-শাসিত ভারত রাষ্ট্র, যা গত বছর কয়েক হাজার করোনা কেসের সময় রাস্তায় বের হওয়া গরিব জনগণের উপর অকথ্য অত্যাচার করেছিল, সেই রাষ্ট্রই আজ নির্বাক দর্শক হয়ে পর্দার আড়াল থেকে মানুষ কে রাস্তায় দমবন্ধ হয়ে মরতে দেখছে। সেই রাষ্ট্রই আজ জনগণ কে নতুন ভাবে খুন করছে। নির্লিপ্ত থেকে। নিজের ভূমিকা সম্পর্কে উদাসীন থেকে। জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার কে অবজ্ঞা করে। আর এই পরিস্থিতির ফলে দেশের ধনী ও শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে যে চরম করোনা ভীতি দেখা দিচ্ছে তা ব্যবহার করে বৃহৎ ওষুধ কোম্পানিগুলোর ভ্যাকসিনের চাহিদা বৃদ্ধি করে বিরাট এক বাজার তৈরি করছে রাষ্ট্র। কার স্বার্থে এই চাহিদা সৃষ্টি করা? কে উপকৃত হবে এতে?

দেশের হতদরিদ্র জনগণ এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভেঙে পড়ার সাক্ষী বহুদিন ধরেই ছিলেন। তাঁরা হাসপাতালে শয্যা পেতেন না, ওষুধ পেতেন না আর অক্সিজেন তো দূরের কথা। তবুও তাঁদের মৃত্যু এই ৭৪ বছরে চোখে পড়েনি। চোখে পড়েছে যখন সেই অব্যবস্থার ফলে ধনিক শ্রেণীর আর শহুরে মধ্যবিত্তের মৃত্যু হওয়া শুরু হল। গরিব মানুষের সোশ্যাল মিডিয়া নেই, হোয়াটস্যাপ নেই। তাই তাঁরা জানতে পারছেন না যে কোথায় হাসপাতালে শয্যা খালি হয়েছে, কোথায় অক্সিজেন পাওয়া যাবে বা কোথায় ওষুধ পাওয়া যাবে। তাঁরা জানছেন না কারণ এই সবের পিছনে খরচ করার মতন টাকাও তাঁদের হাতে নেই। ফলে তাঁরা নিশ্চুপ হয়ে মৃত্যু বরণ করছেন।

অন্যদিকে ধনিক শ্রেণী আর মধ্যবিত্তের নেটওয়ার্ক আছে, সোশ্যাল মিডিয়া আছে আর আছে স্মার্ট ফোন। তাঁরা নিজেদের নেটওয়ার্ক আর প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে জানতে পারছেন কোথায় কত শয্যা আছে, কোথায় ভেন্টিলেটর আছে, কোথায় অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে আর কোথায় ওষুধের যোগান আছে। তাঁরা টাকা দিয়ে তা কিনতেও পারছেন। শুধু নেটওয়ার্ক, প্রভাব, ইত্যাদি ব্যবহার করে তাঁরা হাসপাতালে শয্যা থেকে অক্সিজেন জোগাড় করছেন যা অবশ্যই মানুষের প্রাণ বাঁচাতে দরকার। কিন্তু এই অসম বণ্টনের খেলায়, এই অসম প্রতিযোগিতায়, জীবন হারাচ্ছেন সেই গরীব মানুষগুলো যাঁদের প্রতিপত্তি নেই, যাঁদের নেটওয়ার্ক নেই।

ভারতবর্ষ বাদে যে কোন সভ্য বা গণতান্ত্রিক দেশে, একটা পুঁজিবাদী জনকল্যাণ মূলক রাষ্ট্র থাকলেও, নাগরিকদের কিন্তু নিজেদের এই সব বিষয় নিয়ে ছুটতে হত না। কারণ সেই ভূমিকা পালন করে রাষ্ট্র। কারণ এই কাজের জন্যেই একটা দেশলাই কাঠির বাক্স থেকে শুরু করে কোন কিছু কিনলেই রাষ্ট্র কর নেয়, অনেক সময়ে ঘাড় ভেঙে। ফলে এই কাজগুলো রাষ্ট্র করতে বাধ্য কারণ মানুষ আন্দোলন করে, নিজেদের অধিকার কে ফলিয়ে, রাষ্ট্র কে এই ন্যূনতম পরিষেবাগুলো দিতে বাধ্য করেছে। কিন্তু মোদী-র ভারতে সরকারের থেকে যুদ্ধ, পুলিশী সন্ত্রাস, ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো, মানুষ কে বেনাগরিক করা, তাঁদের জেলে বন্দী করা আর সাধারণ গণসংগঠন নিষিদ্ধ করা থেকে শুরু করে আদিবাসী জনগণ কে তাঁদের জল-জঙ্গল-জমি থেকে উচ্ছেদ করার কাজ বাদে আর কিছু আশা করা আহম্মকতা।

ভারত রাষ্ট্রে আজ প্রাণের অধিকার নিয়ে লড়তে গেলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে, করোনাকালে রাষ্ট্রের উদাসীনতার বিরুদ্ধে ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সময়টা খুবই সঙ্কটপূর্ণ আর এই মুহূর্তে যদি রাষ্ট্র কে তার দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য না করা হয়, তাহলে বিজেপি কে রাজনৈতিক ভাবে পরাস্ত করা তো দূরে থাক, আমরা কেউই আমাদের পরিবারগুলো কে রক্ষা করতে পারবো না। তাই জনগণের ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকার কে একটি গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থা বানাতে বাধ্য করতে হবে ও তার সাথে রাষ্ট্র কে সমস্ত মানুষ কে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া থেকে অক্সিজেন যোগান দেওয়ার দায়িত্ব, অ্যাম্বুলেন্স থেকে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য করতে হবে।

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla