Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the schema-and-structured-data-for-wp domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
এনআরসি-র আগেই বাংলা থেকে তামিলনাড়ু পর্যন্ত বাংলাদেশী উৎখাতের নামে গরিব ভাগানো শুরু | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

একদিকে যখন পশ্চিমবঙ্গে বাস করা গরিব মানুষ ও দেশভাগের শিকার হওয়া উদ্বাস্তু জনগণ ভাবছেন যে গত বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হেরে যাওয়ায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস বিজয়ী হওয়ায় জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া গেছে, তখন দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাজাঘম (ডিএমকে) নেতৃত্বাধীন তামিলনাড়ু সরকারের “বাংলাদেশী উৎখাত” করার প্রকল্প আজ সেই কঠিন সত্যটা মানুষের সামনে তুলে ধরেছে – বাংলা-ভাষী মানুষ কিন্তু হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের নিপীড়ন থেকে একটি নতুন নাগরিকত্ব আইন ছাড়া মুক্তি পাবে না। 

গোটা তামিলনাড়ু জুড়ে রাজ্য পুলিশ হঠাৎ পশ্চিমবঙ্গ থেকে দক্ষিণের রাজ্যটিতে কাজ করতে যাওয়া গরিব মানুষদের গ্রেফতার করছে বিদেশী আইন (ফরেনার্স এক্ট), ১৯৪৬, প্রয়োগ করে। এর সাথেই নিকটবর্তী অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের পুলিশও (অবিজেপি – ওয়াইএসআর কংগ্রেস শাসিত) অনেক পশ্চিমবঙ্গ বাসী কে, বিশেষ করে দিনমজুর, দরিদ্র মানুষদের, ধরে বাংলাদেশী বলে চালান করে দিচ্ছে। তাঁদের দোষ? তাঁরা লকডাউনে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্যদের সাথে নিজেদের গ্রামে ফিরে যাননি। 

দ্য হিন্দু পত্রিকা জানাচ্ছে যে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে, তিরুপুর জেলার থেকে তিনজন বাংলাভাষী মানুষ কে বাংলাদেশী সন্দেহে, ফরেনার্স এক্ট এ গ্রেফতার করা হয়েছে। জুলাই মাসে কুড্ডালোর জেলার রেড্ডিচাভাদি থানা অঞ্চলে পাঁচজন কে “বাংলাদেশী” সন্দেহে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের ফরেনার্স এক্ট, ইমোরাল ট্র্যাফিকিং (প্রিভেনশন) এক্ট বা বেআইনি পাচার (প্রতিরোধ) আইনের ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। কেন তাঁদের উপর সন্দেহ হল পুলিশের?

এই “বাংলাদেশী” সন্দেহে ধৃতদের, যাঁদের ফরেনার্স এক্ট অনুসারে “নিরপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত দোষী” বলে গণ্য করা হবে ও জামিনও দেওয়া হবে না, কাছ থেকে আসল আধার কার্ড ও অন্যান্য ভারতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তবুও কেন তাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে? কারণ তামিলনাড়ুর পুলিশের—যাঁরা বাংলার “ব” জানেন না—মনে হয় যে এরা বাংলাদেশী কারণ তাঁদের সন্দেহ এই লোকেরা টাকা দিয়ে, দুর্নীতির সহায়তায় হয় আধার কার্ড বানিয়েছে না হয় আধার বানাবার সেই সুযোগটি নিয়েছে যেখানে বলা হয়েছে ভারতে ১৮২ দিন বাস করলেও আধার বানানো যাবে। আর তারপরে তাঁরা নাকি আধারের ভিত্তিতে বাকি সমস্ত পরিচয়পত্র বানিয়েছেন। 

অর্থাৎ, তামিলনাড়ুর পুলিশের মতে, ধৃতদের সকল পরিচয়পত্র আসল, কিন্তু তবুও নকল। কিন্তু সেটা কে নির্ধারণ করবে? আদালত? কিন্তু ফরেনার্স এক্ট কে ব্যবহার করে গরিব মানুষ কে পদপিষ্ট করতে কিন্তু সরকার ইতিমধ্যে প্রতিটি রাজ্যেই ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গড়ছে যাতে আমলারা বিচার করেন ও সেই বিচার সর্বদাই প্রহসনে পরিণত হয়। একজন মানুষের সঠিক সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র থাকলেও কী ভাবে সরকার বা পুলিশ তাঁকে বিদেশী হিসাবে গণ্য করছে? 

নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, ২০০৩ (সিএএ ২০০৩), আইনটির ১৪(এ) ধারা অনুযায়ী এনআরসি বানিয়ে কে নাগরিক আর কে বেনাগরিক তা নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। আর সিএএ ২০০৩ এর নিয়মাবলী হিসাবে যে কোন ধরণের পরিচয়পত্র আসল হলেও সরকারের কাছে এই ক্ষমতা দেওয়া আছে যে “বেআইনি অভিবাসী” হিসাবে চিহ্নিত মানুষেরা সেই পরিচয়পত্র মিথ্যা বা ছল-প্রতারণা করে বানিয়েছেন সেই অভিযোগে ফৌজদারি মামলা করার। 

আজ যে ঘটনা তামিলনাড়ুতে হয়েছে তা অনেক সময়েই উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় ঘটে। মতুয়া ও নমঃশূদ্র উদ্বাস্তুদের সাথে। এবারে যখন ভীষণ ভাবে বিজেপি-বিরোধী ও পেরিয়ার-পন্থী ডিএমকে সরকার গরিব বাঙালিদের, মুসলিম ও দলিতদের নিপীড়ন করছে ফরেনার্স এক্ট  ব্যবহার করে, ঠিক তখনই কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর থেকে গ্রেফতার হলেন তিনজন গরিব মানুষ, যাঁরা ফেরিওয়ালার কাজ করতেন। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বলছে তাঁরা নাকি বাংলাদেশ থেকে আগত ইসলামী সন্ত্রাসী আর তাঁরা নাকি গোটা পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসের জাল বিছিয়ে বড় কোন নাশকতা ঘটাতে এসেছে। 

দাবিটা “তুলনামূলক ভাবে কম পাপী” বা “লেসার ইভিল” বলে পরিচিত ও তথাকথিত এক শ্রেণীর বামপন্থীদের চোখে রাতারাতি ফ্যাসিবিরোধী হয়ে যাওয়া বন্দোপাধ্যায়ের পুলিশের।সেই দাবির কোন বিশ্লেষণ না করেই আনন্দবাজার পত্রিকা-র মতন বাজারী সংবাদমাধ্যম তা হুবুহু প্রকাশ করে ও পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে ইসলামবিদ্বেষ ও তার সাথে “বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ” নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ব্রাক্ষণত্ববাদী শাসকশ্রেণী কে সহায়তা করছে। এর ফলে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ আর তীব্র হবে আর বিজেপি যেমন লাভবান হবে তেমনি তৃণমূল কংগ্রেসও ঘোলা জলে মাছ ধরবে।

বর্তমানে যাঁরা ভাবছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গ কে বিজেপির হাত থেকে বাঁচাবে, তাঁরা কিন্তু একবারও ভেবে দেখছেন না যে এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসই বিজেপির ভূমিকাটা পালন করছে আর তাতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) যারপনাই খুশি। যদি বন্দোপাধ্যায় তাঁর সরকার কে ব্যবহার করে এটা প্রতিপন্ন করেন যে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী বা কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের ভাষায় “অনুপ্রবেশকারীর” সংখ্যা বেড়ে গেছে ও এরা নাকি পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাস করতে চায় তাহলেই আরএসএস এর এক ঢিলে তিন পাখি মারা হয়। প্রথমত, এর মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা সহজ হবে ও প্রতিটি বাঙালি মুসলিমকে “বাংলাদেশী” তকমা দিয়ে হেনস্থা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, এর মাধ্যমে এনআরসি করার পক্ষে সংখ্যাগুরু সমাজ কে টেনে আনা যাবে যদিও এনআরসি-তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন অমুসলিম উদ্বাস্তুরা, নমঃশূদ্র, রাজবংশী আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা, আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এই রাজ্যের আদিবাসী জনগণ। তৃতীয়ত, যেহেতু এই সব কিছুই করা হবে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের দ্বারা তাই এর একটা “ধর্মনিরপেক্ষ” ইমেজ থাকবে ও বিজেপি-র গায়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও কোন দাগ লাগবে না যদিও এনআরসি ও নাগরিকত্ব কেন্দ্রের বিষয়। 

তৃণমূল কংগ্রেস-শাসিত পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার হরিদেবপুর থেকে ডিএমকে-শাসিত তামিলনাড়ু, বাম-শাসিত কেরলের ডিটেনশন সেন্টার থেকে ওয়াইএসআর কংগ্রেস-শাসিত অন্ধ্র প্রদেশের পুলিশের “বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী” বাড়ছে বলে অভিযোগ করা, এই সব মিলিয়ে একটাই সঙ্কেত দিচ্ছে, এনআরসি বা ফরেনার্স এক্ট, ভারতের শাসক শ্রেণীর সস্তার দাসশ্রমিক জোগানোর জন্যে যে করেই হোক সরকারগুলো কোটি কোটি মানুষ কে বেনাগরিক বানাবে আর তাতে অগ্রভাগে থাকবে বাংলার মানুষ। অথচ খুব আশ্চর্যজনক ভাবে এই ইস্যু নিয়ে কোন বিরোধী রাজনৈতিক দল, এমন কী আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট থেকে শুরু করে মানবধিকার ও বন্দী মুক্তি সংগঠনগুলো কোন বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলছে না। দেশের মানুষের, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বাস করা অসংখ্য উদ্বাস্তু মানুষের, নিঃশর্তে নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করার দাবিতে, আইন করে জন্মগত নাগরিকত্বের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার দাবিতে হাতে গোনা কয়েকটা ছাড়া বেশি কেউ কাজ করছে না। সংগ্রামের এই খরা না কাটলে এই অবস্থার কোন গুণগত পরিবর্তন হবে কি?

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla