Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the schema-and-structured-data-for-wp domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
হাঁসখালির গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করলো পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ফ্যাসিবাদী শাসন বিজেপির পথেই চলেছে | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

মর্মান্তিক বগটুই গণহত্যার কয়েকদিনের মাথায়, কলকাতা থেকে ঠিক ১০৩ কিলোমিটার দূরে নদীয়ার হাঁসখালিতে ঘটে গেছে একটি মর্মান্তিক গণধর্ষণ ও হত্যা কান্ড। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল কংগ্রেস নেতার ছেলের নেতৃত্বে গণধর্ষণ করা হয় এক নাবালিকা কে আর তার ফলে তাঁর মৃত্যুও হয় বলে বাড়ির লোকের অভিযোগ। এই নিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে চরম ঔদ্ধত্যের শীর্ষে আসীন তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনের বিরুদ্ধে জনরোষ ফেটে পড়ছে রাজ্যের নানা অঞ্চলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব হাঁসখালির গণধর্ষণ ও হত্যাকান্ড কে লঘু করে দেখাবার চেষ্টা করলেও পশ্চিমবঙ্গের জনগণ সেই ফাঁদে পড়তে অস্বীকার করেছেন। 

নদীয়ার হাঁসখালির এক নম্বর ব্লকের গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ব্রজগোপালের ছেলে সোহেল-র জন্মদিনে, গত ৪ঠা এপ্রিল ২০২২, বিকেল চারটের সময়, বগুলা গ্রামের বাসিন্দা, তাঁরই প্রেমিকা এক ১৪ বছরের নাবালিকা কিশোরী যোগ দিয়েছিলেন। সেই শেষবারের মতন বাড়ির থেকে বেরিয়েছিলেন নাবালিকাটি। জন্মদিন উদযাপনের পরে বাড়িতে ফেরত আসা মেয়ের অতিরিক্ত মাত্রায় রক্তক্ষরণ দেখে মা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলে সেই রাতে মেয়ে তাঁর মা কে জানায় যে তাঁর প্রেমিক আর তার দলবল মদ খাইয়ে তাঁকে ভর সন্ধ্যা বেলায় গণধর্ষণ করেছে এবং পরে রাত হয়ে যাওয়ায় বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেছে। তার এখন অসহ্য পেটে ব্যথা করছে। উদ্বিগ্ন মা সেই শুনে গ্রামীণ ডাক্তারের কাছে ওষুধ আনতে বেরিয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন যে সব শেষ। মেয়ের হাত পা ঠান্ডা, ওষুধ আর কাজে দেবে না ধর্ষিতা মেয়ের শরীরের ব্যথা কমাতে। 

এদিকে, নাবালিকার মৃত্যুর খবর পেয়েই তড়িঘড়ি করে তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্যেরা এসে গ্রামীণ শ্মশানে দেহ দাহ করিয়ে দেন ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই। সদ্য মেয়ে-হারা মা গ্রামীণ সিভিক পুলিশ মারফত থানায় খবর পাঠাতে গেলে সিভিক পুলিশ তা এড়িয়ে গেছে তৎকালীন সময়। পরবর্তীকালে নিপীড়িতার মা থানায় গেলে পুলিশ ধর্ষণের মামলা রুজু করতে অস্বীকার করেছে। মা এর মুখের উপরে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ নাকি জানিয়েছেন, “এফআইআর হবে কী করে? প্রমাণই তো নেই কোন ধর্ষণের।”  

আইনরক্ষকদের এই বক্তব্য শুনেই নিপীড়িতার মা পুলিশের উপর রেগে থানা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন, কারণ পুলিশ তখন সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রজগোপালের লেঠেল বাহিনীর মতন ব্যবহার করছিল। অবশেষে, প্রায় ছয় দিনের মাথায়, গ্রামবাসীদের চাপে, ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাইল্ডলাইনের মারফত এফআইআর নিতে বাধ্য হয়ে মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপাল কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অথচ তাঁর ছেলে সোহেল নাকি পরিবারসহ পলাতক।  

ভারতীয় আইন অনুযায়ী “অপরাধীকে সঙ্গ দিয়ে দোষ ঢাকা সমান অপরাধ”, এই শর্তে পুলিশ গ্রেফতার করেনি ব্রজগোপালের তৃণমূল কংগ্রেসের সাঙ্গপাঙ্গ কে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ জানিয়েছেন যে এই ব্রজগোপাল নাকি এর আগে গ্রামীণ পুলিশ (সিভিক) কে সঙ্গে নিয়েই গ্রামের গরীব মানুষের জমি লুট করেছেন এবং তাঁর নাকি অনেক দু-নম্বরি ব্যবসা আছে যার সাথে যুক্ত লোকাল থানার আইনরক্ষকেরাও। 

এই ঘটনা নিয়ে যখন গোটা রাজ্য উত্ত্বাল ঠিক তখনই, বন্দোপাধ্যায় প্রকাশ্যে জানালেন যে ঘটনাটির নানা কারণ থাকতে পারে এবং মেয়েটি নাকি গর্ভবতী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, প্রভৃতি। যদিও বন্দোপাধ্যায় একবারও জানাননি যে একটি নাবালিকা মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও তাঁর সাথে যৌন সম্পর্ক করা হল আইনত ধর্ষণই। তার বদলে একটি মৃত মহিলার “চরিত্র” নিয়ে কথা বলে বন্দোপাধ্যায় আগে থেকেই সচেতন করে দিলেন রাজ্যের জনগণ কে যে সোহেল বা ব্রজগোপালের বিরুদ্ধে তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেবেন না।  

জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতে দিনে গড়ে মোট ৮০টি খুন ও ৭৭টি ধর্ষণের মামলা ঘটছে। প্রতি ১৬ মিনিটে একজন ভারতীয় নারীকে ধর্ষিতা হতে হয়। ২০২০ সালে ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে ২৮,০৪৬টি আর খুনের মামলা ২৯,১৯৩টি। উত্তর প্রদেশ এর শাসক ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকারের সাথে তুলনা করে ও পরোক্ষ কায়দায় সেই রাজ্যেরই নীতি অনুসরণ করে চলা তৃণমূল কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে সারা ভারতে খুন ও ধর্ষণের তালিকায় চতুর্থ স্থানে।  

এ ছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ অপরাধ মামলাই অমীমাংসিত হয়েই পড়ে রয়েছে, অভিযুক্তরা বেশ কিছুদিন জেল খেটেও ছাড়া পেয়ে সেই একই অপরাধ অন্য রকম ভাবে করতে উদ্যত হয়েছে, কিংবা পরবর্তীতে শাসক শ্রেণীর কোনো দলের হয়েই সংবিধান সম্মত পথে ভোটে দাঁড়িয়েছে। তাই, এখন ভারত তথা বাংলার ‘মা ও ভালোবাসা’ বিচারের নামে প্রহসন দেখতে দেখতেই প্রাণ হারাতে হয়তো শিখেও গেছে। 

বর্তমানে একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতে নেতাদের জমি দখল, আনিস খাঁ থেকে বগটুই এর হত্যালীলা চলছে রাজ্যের পুলিশ গোয়েন্দাদের সমর্থনে, ঘটছে হাঁসখালির গণধর্ষণ ও হত্যাকান্ড, তখনই ঠিক এই রাজ্যেরই কিছু মানুষ গরীব শ্রমিক-কৃষক ও আপামর খেটে-খাওয়া মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়ে সমাজ থেকে এইরকম সামাজিক রোগ মুছতে অগ্রসর হলেই এই পুলিশ ও গোয়েন্দারা তাঁদের পিছু নিয়ে, তাঁদের ‘মাওবাদী’ তকমা দিয়ে দমন মূলক আইনে জেলে ভরছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেফতারি আর তাঁদের উপর দমনমূলক বেআইনী কার্যকলাপ (প্রতিষেধক) আইন (ইউএপিএ) চাপানো তারই ইঙ্গিত করছে। 

দিল্লির কেন্দ্রে আসীন বিজেপির পিতৃপ্রতীম সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) ভারত কে একটি ব্রাক্ষণত্ববাদী-ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করে গরিব মানুষের কষ্টার্জিত অধিকার ও রসদ কেড়ে নেওয়ার স্বপ্ন পূরণে বিজেপির পথে আরো ভাল ভাবে এগিয়ে যাওয়া, ‘ফ্যাসিবাদ-বিরোধী নেত্রী’ সাজা বন্দোপাধ্যায়, গরিব, আদিবাসী, কৃষকদের জল-জমি-জঙ্গল লুঠ করতে, পশ্চিমবঙ্গে ফ্যাসিবাদের নীতিগত সংজ্ঞা না বদলালেও, কৌশলগত রূপরেখা বদলে দিয়েছেন।  

তাই আজ পশ্চিমবঙ্গের বুকেই উত্তরপ্রদেশের হাতরাসের গণধর্ষণ ও হত্যার মতন হাড় হিম করা ঘটনা ঘটছে। হাঁসখালির গণধর্ষণ ও হত্যাকান্ড, রামপুরহাট গণহত্যা, আনিস খাঁর হত্যা, শ্রমজীবী মানুষ ও কৃষকের আন্দোলনের উপর দমন পীড়ন, ছাত্র আন্দোলনের উপর দমন পীড়ন, প্রভৃতি কিন্তু আর কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং সারা ভারতে যে ভাবে অস্ত্রের জোরে, রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যবহার করে আরএসএস একটি ফ্যাসিবাদী উপরিকাঠামো গড়ে তুলছে, এবং যা করতে পশ্চিমবঙ্গে বন্দোপাধ্যায় আরএসএস কে সাহায্য করছেন, তারই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রশ্ন হল, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি-সচেতন, গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানুষ আর কতদিন এই ঘটনাগুলো মুখ বুজে সহ্য করবেন?

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla