Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
ক্যাপিটল হিল দাঙ্গাঃ গণতন্ত্রের তাসের ঘর ভাঙছে কি? | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

ভেঙে পড়েছে গণতন্ত্রের তাসের ঘর। নখ দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে নেকড়ের দল শিকারের উপর। সাধারণ মানুষের জীবনে যে “গণতন্ত্রী” নেকড়েদের শিকার হওয়া ছাড়া অন্য কোন গতি নেই, সেই কথা কিন্তু প্রমাণিত হল মার্কিন মুলুকে, মানে একেবারে গণতন্ত্রের পীঠস্থানে। ক্যাপিটল হিল, যা হল মার্কিন সংসদ ভবন, জুড়ে গত ৬ই জানুয়ারি তান্ডব করে হাজারো-হাজারো বহির্গামী রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শ্বেতাঙ্গ-আধিপত্যবাদী ফ্যাসিস্ট সমর্থকেরা। তাঁরা এসেছিলেন জোসেফ রবিনেট বাইডেন কে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিজয়ী ঘোষিত হওয়ার থেকে আটকাতে। আর তাঁদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে একজন পুলিশকর্মী সহ পাঁচ জন প্রাণ হারান। ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা নিয়ে মার্কিন ও বিশ্ব রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়। আর একই সঙ্গে তোলপাড় শুরু হয় বিশ্বজুড়ে ফ্যাসিস্ট আর উদারনৈতিক গণতন্ত্রীদের মধ্যে—শেষের দল কে আবার মার্কিন মুলুকে বাম বলা হয়—এটা নিয়ে যে কে বেশি আক্রান্ত আর কার গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে এই ঘটনায়।

ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা তো আর যে সে দাঙ্গা না, এইটা হল একেবারে ক্যাপিটল হিল বেদখল হয়ে যাওয়া। ক্যাপিটল হিল নামক সেই বৃহৎ অট্টালিকায় যেখানে বসে সাদা চামড়ার মানুষেরা আর তাঁদের কিছু কালো চামড়ার তল্পিবাহকেরা ফন্দি আঁটেন, সিদ্ধান্ত নেন হাজার হাজার মাইল দূরে কোন দেশে বোমা বর্ষণ করে লক্ষ লক্ষ মানুষ মেরে সেই দেশের সম্পদ, বাজার আর শ্রমের উপর নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারের, সেখানে উদ্ভট পোশাক পড়ে, মাথায় শিং লাগিয়ে, কনফেডারেট ও মার্কিন পতাকা নিয়ে হাজার হাজার শ্বেতাঙ্গ-আধিপত্যবাদীরা দাপাদাপি করলো। বিশ্বের সবচেয়ে “শক্তিশালী” রাষ্ট্র তা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে চেয়ে দেখলো আর তার জনপ্রতিনিধিরা, যাঁরা সারাদিন হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা করেন, শেষে আশ্রয় নিলেন বেঞ্চের তলায়। এই ঘটনার পরে মার্কিনপন্থী গণতন্ত্রীদের বগল বাজানো কিছুক্ষণের জন্যে বন্ধ হয়েছিল।

এ যাবৎকাল বিশ্বের মানুষ দেখে এসেছেন যে তেল, প্রাকৃতিক সম্পদ বা কোন মূল্যবান খনিজ পদার্থ কোন দেশের মাটির তলায় পাওয়া গেলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সেই দেশের সরকার কে গায়ের জোরে উৎখাত করে নিজের পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠা করতো। এইবারে জোর করে, বলপূর্বক ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিযোগ তুলে খোদ বাড়িতে ডাকাতি হতে দেখলেন মার্কিন জনগণ। অবশ্যই সমস্ত বৃহৎ একচেটিয়া ও লগ্নি পুঁজির-মালিকানাধীন বড় বড় সংবাদমাধ্যমগুলো, যত দোষ-নন্দ ঘোষ ফর্মুলা ব্যবহার করে ট্রাম্পের ঘাড়ে সব দায় চাপিয়ে তাঁকে একমাত্র ফ্যাসিস্ট বানিয়ে নিজেদের “গণতান্ত্রিক” শিবির থেকে বিতাড়িত করার কথা বললো।

ডেমোক্র্যাট দলের প্রতিনিধি বাইডেন অবশ্যই মার্কিন জনগণ কে এই সুযোগে তাঁর নেতৃত্বের ছায়াতলে এসে সুরক্ষিত বোধ করার ডাক দিলেন। আর ট্রাম্প শুধু যে মার্কিন দেশের রাজনীতিতে একঘরে হয়ে গেলেন তাই না, তাঁর ব্যক্তিগত একাউন্ট হিংসা ছড়াবার অভিযোগ তুলে চিরকালের জন্যে নিষিদ্ধ করে দিল টুইটার, আর ফেসবুক বাইডেন কে খুশি করতে ২০শে জানুয়ারি তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অবধি ট্রাম্পের একাউন্ট কে অকেজো করে রাখার বিধান দিল।

এই সব ঘটনা নিয়ে নানা মশলাদার খবর দুনিয়া জুড়ে পরিবেশিত হচ্ছে মূলধারার কর্পোরেট-নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমগুলোর দ্বারা। অনেকেই বিশ্বাস করতে লাগলেন যে ট্রাম্পের টুইটার একাউন্ট নিষিদ্ধ হওয়ায় আর তাঁকে জোর করেই বাইডেনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য করায় তাঁর নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী রাজনীতির খেলা শেষ হল। অনেকে আশা করছেন যে বাইডেন এসে ট্রাম্প জমানার অন্যায় ও অবিচারের, বিশেষ করে দেশে বাস করা অভিবাসীদের উপর চলমান নিপীড়ন বন্ধ হবে এবং সর্বত্রই একটি নতুন যুগের সূচনা হবে। কিন্তু সে আশা যে গুড়ে বালি সেই অপ্রিয় সত্যের থেকে অনেকেই যোজন যোজন দূরত্ব বজায় রেখেছে।

নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাইডেন আর ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ অবধি সংখ্যার জেরে বাইডেন এগিয়ে গেলেও ট্রাম্প কিন্তু হার মানেননি। প্রথমে নির্বাচনের গণনাতে রিগিং হয়েছে অভিযোগ করেন, আইনের আশ্রয় নেন, আর ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেন। মাঝে তিনি সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে কুখ্যাত মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-এর সাথেও বিবাদে জড়িয়ে যান। এইদিকে ৬ই জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে বাইডেন কে রাষ্ট্রপতি হিসাবে সরকারি ভাবে অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তাব ছিল মার্কিন কংগ্রেসের কাছে। সেইদিন দলে-দলে ট্রাম্প সমর্থকদের সেখানে পৌঁছে যাওয়া আর ট্রাম্পের টুইটার থেকে তাঁদের সমর্থন করা কে ঘিরেই ট্রাম্পের ঘাড়ে সব দোষ চাপানো হয়েছে।

ট্রাম্প-বিরোধীরা বলছেন যে উনি ক্ষমতা দখলে রাখতে একটি অভ্যুথান করাচ্ছিলেন ফলে তাঁকে বিতাড়িত (ইম্পিচ) করা হোক। অথচ যদিও ট্রাম্পের ঝুলিতে প্রায় সাড়ে সাত কোটি ভোট পড়েছিল নভেম্বর মাসে, তবুও তাঁর পক্ষে কোন ভাবেই কয়েক হাজার নিরস্ত্র সমর্থকদের নিয়ে—কিছু হয়তো সশস্ত্র ছিল—মার্কিন মুলুকের ক্ষমতা দখল করা সম্ভব ছিল না। আর করলেও যে ভাবে মার্কিন সংবিধানে ক্ষমতা কে ভাগ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, কোন একক শক্তির পক্ষে ক্ষমতার চরম কেন্দ্রীকরণ করা সেখানে সম্ভব ছিল না। মোটের উপর মার্কিন শাসক শ্রেণীর বড় অংশটিই সেটা চাইতো না। ফলে ট্রাম্প যে ওই উদ্ভট পোশাক পরিহিত লোকেদের নিয়ে ক্ষমতা দখল করতে এসেছিল এটা একটা ছেলে ভোলানো গল্প।

তবে যদিও এই ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা হওয়ায় সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে বাইডেনের এবং তিনি অনায়সে কংগ্রেসের অনুমোদন পেয়ে যান বিজিত রাষ্ট্রপতি হিসাবে, ট্রাম্পের ঘাড়ে সব দোষ চাপায় তাঁকে বেশ প্রগতিশীল হিসাবে চালিয়ে দেওয়া গেল। যদিও দীর্ঘ চার বছরে ট্রাম্প কোন নতুন যুদ্ধ শুরু করেননি, কিন্তু বাইডেন বারাক ওবামা-র উপরাষ্ট্রপতি থাকার সময়ে কিন্তু সাতটি নতুন যুদ্ধ শুরুর কান্ডারি ছিলেন। ফলে বর্তমানে যখন তিনি ক্ষমতায় আসীন হচ্ছেন, এটা মেনে নিতে হবে যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ শীঘ্রই নতুন যুদ্ধে যোগ দেবে। আর এর সাথে সাথে দেশে ট্রাম্পের দৌরাত্ব কমানোর নাম করে যে আইন আনার কথা বাইডেন বলেছেন তার প্রয়োগ হবে কিন্তু ট্রেড ইউনিয়ন, ছাত্র-যুব ও কৃষ্ণাঙ্গদের লড়াইগুলো কে দমন করতে। ফ্যাসিস্টরা কিন্তু ক্ষমতার থেকে উচ্ছেদিত হয়নি। ফ্যাসিস্টরাই ক্ষমতায় থাকছে শুধু ট্রাম্পের মতন একজন জোকার সব দোষ ঘাড়ে নিয়ে আবর্জনার স্তুপে যাচ্ছে।

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla