Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ প্রথম প্রকোপের চেয়ে অনেক বেশি সন্দেহজনক | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

গোটা দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ঘোষণা করছে কর্পোরেট-মালিকানাধীন মূলধারার সংবাদ মাধ্যম। মূলতঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র ভারতীয় জনতা পার্টি-র (বিজেপি) বিরোধী দলগুলোর শাসিত রাজ্যেই এই প্রকোপ বাড়ছে। বলা হচ্ছে এটি করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ উঠেছে আর তার প্রকোপে জবুথবু হয়ে গেছে মহারাষ্ট্র। একদিকে মোদী সরকারের ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু করা টিকাকরণের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে টিকার অভাবে আর অন্যদিকে হাসপাতালে বেড নেই রুগীদের জন্যে। অক্সিজেন নেই। আর নেই জরুরী ওষুধ। একদিনেই মহারাষ্ট্রে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ এ ৯ই এপ্রিল ২০২১ এ ৫৬,২৮৬ টি নতুন কেস যোগ হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৭৬টি। সেই একই দিনে গোটা ভারতে ১৩১,৯৬৮টি নতুন কেস যোগ হয় আর ৭৮০টি মৃত্যু হয়।

যদিও মহারাষ্ট্র সরকার চরম ভাবে ভীত উচ্চবিত্ত ও শহুরে মধ্যবিত্তদের স্বার্থে নানা জায়গায় নানা ভাবে লকডাউন ঘোষণা করেছে, তবুও তাতে কোন কাজ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। সারা দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্র কে এই ভাবে ওষুধ, অক্সিজেন আর টিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে না যোগান দিয়ে মোদী সরকার আর বিজেপি যেমন জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তেমনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংকট কে তীব্র করছে। এক বছর আগে যে মোদী বিরোধীদের কথায় আমল না দিয়ে দেশজোড়া লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন ২৫শে মার্চ থেকে আর ৯ই এপ্রিল ২০২০ তে জনগণ কে প্রদীপ, মোমবাতি আর টর্চ জ্বালিয়ে কোভিড-১৯ তাড়াবার কথা শিখিয়েছিলেন, সেই মোদী এখন বলছেন মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন (ক্ষুদ্র আটক অঞ্চল) তৈরির কথা। তার সাথেই আবার ঢোকাচ্ছেন “টিকা উৎসব” পালন করার কথা।

গত এক বছরের অভিজ্ঞতা বিশ্বের জনগণ কে শিখিয়েছে যে শাসকশ্রেণীর কাছে কোভিড-১৯ মহামারীর সাথে লড়াই করার কোন রণনীতি নেই। বিজ্ঞানী আর চিকিৎসকদের মধ্যেও এই বিষয়ে সুস্পষ্ট মতপার্থক্য। শাসকশ্রেণীর ঘনিষ্ঠ বিজ্ঞানী আর চিকিৎসকেরা একবারের জন্যেও রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনাগুলোর সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ করছেন না। শুধু প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ও স্বাধীনচেতা বিজ্ঞানী আর চিকিৎসকেরা বারবার করে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ কে নিয়ে আর এই সংক্রমণটি নিয়ে জনগণ কে সাবধান করে আসছেন এই বলে যে করোনা ভাইরাসের ফলে হওয়া সার্স রোগ মারণ ব্যাধি নয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে সিংহভাগ রুগীই ঠিক হয়ে যাবেন। তবুও কোন ষড়যন্ত্রের ফলে বেশির ভাগ রুগীই চিকিৎসা পাচ্ছেন না, ফলে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে। যাঁরা সময়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে উঠছেন। আবার ৮০% রোগীর ক্ষেত্রে কোন লক্ষণ দেখা দিচ্ছে না। তবুও কোভিড-১৯ কে নিয়ে চরম আতঙ্কের আবহাওয়া সৃষ্টি করা হয়েছে কায়দা করে যাতে মানুষ ভীত হয়, তাঁদের সমষ্টিগত ঐক্য ভঙ্গ হয় ও শাসকের পক্ষে শোষণ ও অত্যাচারের রোলার চালানো সম্ভব হয়।

ভারত বা বিশ্বের কাছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ বা নতুন জীবাণু বড় কোন চ্যালেঞ্জ না। সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আর শত্রু হল বৃহৎ পুঁজির দ্বারা মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আতঙ্ক সৃষ্টি করে মুনাফা আয় করার অভিলাষ। তাই চিকিৎসা করে রোগ সারাবার পথে না গিয়ে, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা কে শক্তিশালী করে জনগণের স্বাস্থ্য কে রক্ষা না করে, দীর্ঘকালীন গবেষণা করে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উপলব্ধিগুলো কে অধ্যয়ন না করেই শুধু টিকা বিক্রি করে বৃহৎ পুঁজির মালিকানাধীন বিদেশী ও দেশী কর্পোরেট ওষুধ কোম্পানিগুলো কে মুনাফা করার রাস্তা করে দিয়ে সরকার দায় সারছে। যে রোগ চিকিৎসায় সেরে যায়, যে রোগে আক্রান্ত ৮০% মানুষের মধ্যে কোন উপসর্গ দেখা যায় না, যাতে এই মুহূর্তে আক্রান্ত মানুষের মাত্র ১.২৮% (১৬৭,৬৪২) মানুষই ভারতে মারা গেছেন, যার মধ্যে অধিকাংশ ঘটনাই কো-মর্বিডিটি বা অন্য কোন মারণ অসুখ যেমন যকৃৎ, হৃদপিন্ড, ফুসফুসের কোন রোগের কারণে হয়েছে যাতে কোভিড-১৯ সহায়কের ভূমিকা পালন করেছে, সেই রোগের জন্যে কোটি কোটি টাকা খরচ করে টিকাকরণ না করে যদি শুধু জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা কে শক্তিশালী করা হত, তাহলে কি ভাল হত না?

যে টিকা-র সাফল্যের হার মাত্র ৬০%, যে টিকা মাত্র কয়েক মাসের পরীক্ষার পরে বাজারে ছাড়া হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তার ফলাফলগুলো ও কার্যকরিতা নিয়ে গবেষণা না করেই, সেই টিকায় কি ভরসা করা যায়? গত ৩রা মার্চ ২০২১ এ দক্ষিণ ভারতের কেরল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন টিকা নেন। এর পরে ৭ই এপ্রিল তাঁর করোনা ধরা পড়ে। এই রকম অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে যেখানে দেখা গেছে টিকাকরণের পরেও মানুষের করোনা হয়েছে আবার অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। এই দায়টা কি কর্পোরেটরা নেবে? যদি না নেয় তাহলে সরকারের থেকে টাকা নিয়ে তারা কী ভাবে অপরীক্ষিত ও অকার্যকরী টিকা বিক্রি করে জনতার স্বাস্থ্য নিয়ে ছেলে খেলা করতে পারে? এর দায় কি প্রধানমন্ত্রী মোদী নেবেন?

করোনা ভাইরাস যদি খুবই মারাত্মক হত তাহলে কি সেটা শুধু বিরোধী-শাসিত মহারাষ্ট্রেই কোপ মারতো কি? কেন হঠাৎ এত আতঙ্ক উঠেছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ নিয়ে যখন প্রথম প্রকোপ নিয়ে একপ্রকার মানুষ নিশ্চিন্ত হয়ে গেছিল যে করোনা ভাইরাস শেষ? কেন পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, তামিলনাড়ু বা কেরলে মহারাষ্ট্রের মতন কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ দেখা দিচ্ছে না? এই যখন দিল্লী হাইকোর্ট বলছে একটি গাড়িও পাবলিক প্লেস আর তাই একজন গাড়িতে একা থাকলেও মাস্ক পড়তে হবে, তখন পশ্চিমবঙ্গে বা আসামে কী সুন্দর মাস্ক ছাড়া, জনস্বাস্থ্য বিধিগুলো, বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব বিধি, কে কাঁচকলা দেখিয়ে বিজেপি নেতা মোদী বা অমিত শাহ সভা করছেন। হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে বিজেপি আর আরএসএস এর নেতৃত্ব সভা, মিছিল, প্রভৃতি রাজনৈতিক কর্মকান্ড করছে তাদের কোনদিনই তো কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপের শিকার হতে হবে না?

আর যদি কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ এতই মারাত্মক হত তাহলে কি মোদী আর শাহ এত সহজেই নিজেরা সব নিয়ম ভঙ্গ করে হাজার হাজার লোক নিয়ে ভোটের দায়ে পাড়ায় পাড়ায় সভা করতেন? তাহলে কি বিজেপি-র কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রার্থীরা মাস্ক ছাড়া বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করতেন? তাহলে কি হাজারো মানুষের মিছিল বের হত এলাকায় এলাকায়? এই যে পাঁচটি রাজ্যের মানুষ নির্বাচনী ঢাকের বাদ্যি শুনছেন, তাঁদের রাস্তায়, গলির মোড়ে, নানা দিকে মানুষের সমাবেশ করে যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বন্যা বইছে, তাতে কি এই রাজ্যগুলোর মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ পড়েনি? কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপের ফলে তাহলে তো দিকে দিকে মহামারী হত। আর যদি ২রা মে এই রাজ্যগুলোর নির্বাচনের ফলাফল আসার পরে যদি কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ এর ছায়া দেখা যায়, যদি অসংখ্য মানুষ অসুস্থ হতে শুরু করে, যদি লকডাউন আর কারফিউ জারি করার পরিস্থিতি আসে তাহলে কি বিজেপি কে দায়ী করা যাবে না?

টিকাকরণ ছাড়াও কর্পোরেট সংস্থাগুলোর ব্যাপক মুনাফা হয়েছে কোভিড-১৯ এর প্রথম প্রকোপ এর পরে। পিউ রিসার্চের একটা সমীক্ষা দেখিয়েছে যে ভারতে ৩.২ কোটি মানুষ মধ্যবিত্ত থেকে দারিদ্র্যের প্রকোপে পড়েছিলেন। আর ভারতের হতদরিদ্র মানুষদের সংখ্যায় (২ মার্কিন ডলার এর কম দৈনিক আয়) ৭.৫ কোটি মানুষ বৃদ্ধি হয়েছে। এর ফলে কিন্তু ধনীদের ভাঁড়ারে আঘাত লাগেনি। অক্সফ্যাম এর সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভারতের চরম ধনী ব্যক্তিদের ধনসম্পত্তি কোভিড-১৯ মহামারী কালে ৩৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময় কালে রিলায়েন্স গোষ্ঠীর মালিক মুকেশ আম্বানি বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি হয়েছেন আর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ডলারে সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে গৌতম আদানীর। এটা কাকতলীয় নয় যে এই দুই বৃহৎ মুৎসুদ্দি পুঁজিপতিরা বিজেপি কে সবচেয়ে বেশি অর্থ যোগান দেন।

কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রকোপ বা তার পরবর্তী প্রকোপগুলো কে রুখে মানুষের স্বাস্থ্য কে রক্ষা করার জন্যে লকডাউন বা কারফিউ বা জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্য ও কাজকর্মের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কোন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন হল দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা কে ঢেলে সাজানো। প্রশ্ন তোলা উচিত যে পিএম কেয়ার বলে যে ট্রাস্টে কোটি কোটি টাকা জড়ো করলেন মোদী আর বিজেপি নেতারা দেশের করোনা সংকটে চোট খাওয়া মানুষদের দোহাই দিয়ে, সেই টাকা কই গেল? সেই টাকা এই মুহূর্তে কেন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা কে ঢেলে সাজাতে ব্যবহার হচ্ছে না? এত সত্ত্বেও কেন মহারাষ্ট্রের মতন সর্বোচ্চ কর দেওয়া রাজ্য কে কেন ওষুধ, টিকা, প্রভৃতি দেওয়া হচ্ছে না? মোদী সরকারের জনস্বাস্থ্য নিয়ে ছেলে খেলা করার বিরুদ্ধে দেশজোড়া গণআন্দোলন গড়ে না তুলতে পারলে, লকডাউন করিয়ে কোটি কোটি মানুষের পেটে লাথি মারার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম না গড়তে পারলে জনগণ কে আম্বানি আর আদানীদের গিনিপিগ বানানোর থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla