Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-hide-security-enhancer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the schema-and-structured-data-for-wp domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী জয় দেখে আপ্লুত থাকা হবে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার চূড়ান্ত নিদর্শন | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বের হওয়ার পরে অনেকেই স্বস্তির শ্বাস ফেলা শুরু করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হেরে যাওয়ায়। এদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই সংখ্যালঘু মুসলিম, যাঁরা ভেবেছেন তৃণমূল কংগ্রেস জিতে যাওয়ায় তাঁরা হয়তো হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদের আক্রমণ থেকে এই যাত্রা রক্ষা পেলেন। আবার বহু বাম ও গণতান্ত্রিক মানুষ, যাঁরা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মধ্যে খোঁজেন ফ্যাসিবাদ-বিরোধী “অগ্নিকন্যা” কে, ভাবছেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী (এনপিআর) আর জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) প্রক্রিয়া কে রুখে দেবে ও বঙ্গবাসী কে নিজ ভূমিতে উদ্বাস্তু হওয়ার থেকে রক্ষা করবে। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী জয় যে তেমন কোন প্রভাবই ফেলবে না তা এখন উপলব্ধি না করলে পরে অনেক দেরি হয়ে যাবে।   

যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী জয়, অর্থাৎ বন্দোপাধ্যায়ের হ্যাট্রিক, জনগণের মধ্যে জেগে ওঠা হিন্দুত্ববাদী বিজেপি-বিরোধী চেতনার একটা প্রতিফলন, কিন্তু তার ফলে যে সত্যিই হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শিবির ধাক্কা খেয়েছে তেমন কোন লক্ষণ কিন্তু নেই। ব্যাপক হারে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়ার বিরুদ্ধে গিয়েও যে ভাবে সাধারণ মানুষ শুধু বিজেপি কে রোখার জন্যে তৃণমূল কংগ্রেস কে ভোট দিয়েছেন তার জন্যে তাঁদের চেতনা কে অভিনন্দন জানানো যেমন জরুরী, ঠিক তেমনি জরুরী এটা বোঝানো যে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলেও তাঁরা কিন্তু বিজেপির থেকে সত্যিই নিরাপদ থাকতে পারবেন না। কেন?

কারণ বন্দোপাধ্যায় বুঝেছেন যে শুধু মাত্র বিজেপি-র আর হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদের ছোবল থেকে বাঁচতে একটা বড় অংশের মানুষ, বিশেষ করে সংখ্যালঘু মুসলিমেরা তাঁর তৃণমূল কংগ্রেস কে আঁকড়ে ধরেছে। এই ভোটাররা বিজেপি কে ভয় পেয়েছেন আর তাই এদের নিজের দিকে রাখতেই তাঁকে বিজেপি দলটি কে রাজ্যে প্রাসঙ্গিক করে রাখতে হবে। অর্থাৎ বিজেপি-র জূজূ দেখিয়ে, রাজ্যে গেরুয়া শিবির কে গণহত্যা আর সাম্প্রদায়িক হিংসা করার ছাড়পত্র দিয়ে এই ব্যাপক মুসলিম জনগণ কে বশ্যতা মানিয়ে বন্দোপাধ্যায় নিজের দিকে রাখতে সক্ষম হবেন, তাঁদের জন্যে কিছু না করেও।

প্রথমতঃ মনে রাখা উচিত যে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত বিজেপির ভোটের হার ৪০.৭% এর থেকে ২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে কমে ৩৮.১৩% হলেও, ২০১৬ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ১০.১৬% ভোটের তুলনায় তা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বিধানসভায় নিজের দৌড়ে বিজেপি তিনটি আসন জিতলেও শেষ পর্যন্ত কেনা-বেচা করে প্রায় ৩০টি আসনের উপর আধিপত্য কায়েম করেছিল। বর্তমানে তিনটির থেকে বেড়ে আসন সংখ্যা ৭৭ হওয়ায় যে বিজেপি আরও বেশি অক্সিজেন রাজ্যে পাবে সে কথা বলাই বাহুল্য। মোট দুটি সাংসদ ও তিনটি বিধায়কের উপর বলীয়ান হয়ে বিজেপি ও তার পিতৃপ্রতীম সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) কিন্তু ২০১৮ সালের মার্চ মাসে গোটা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুন জ্বালিয়েছিল রাম নবমী কে কেন্দ্র করে। এই বার ৭৭টি বিধায়ক আর ১৮টি সাংসদ নিয়ে যে সেই আক্রমণ আরও তীব্র হবে সেটাও সহজে বোঝা যাচ্ছে।   

দ্বিতীয়তঃ তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী জয় কিন্তু নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে, বিশেষ করে এনআরসি থেকে বাদ গিয়ে বেনাগরিক হওয়ার ভয়ের কারণেও হয়েছে। আপামর সাধারণ মানুষ, এমন কী মতুয়া, নমো, প্রভৃতি সম্প্রদায়ের মানুষ, প্রচুর উদ্বাস্তু জনগণের ভোট কিন্তু বিজেপির থেকে ফিরে বন্দোপাধ্যায়ের ঝুলিতে গেছে কারণ মানুষ ভেবেছেন তিনি তাঁদের রক্ষা করবেন এনআরসি থেকে। এটা কিন্তু একটা চরম ভ্রান্ত ধারণা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ নির্বাচনী প্রচারে যাই বলে থাকুন না কেন এটা একটা জানা কথা যে নাগরিকত্ব কেন্দ্রের বিষয় আর এই বিষয়ে কোন ধরণের পদক্ষেপ নেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই। এনআরসি করতে গেলে কেন্দ্র কে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, ২০১৯ (সিএএ ২০১৯), যা একটা জূজূ বানিয়ে মুসলিমদের ভয় দেখানো হয়েছিল, প্রণয়ন করতে হবে না। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, ২০০৩ (সিএএ ২০০৩), এর অধীনেই এনআরসি করার প্রথম প্রক্রিয়া——এনপিআর——শুরু হয়ে গেছে ডিজিট্যাল পদ্ধতিতে। ফলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা না করেই কিন্তু এনপিআর তালিকা কম্পিউটারের মাধ্যমে আধার দিয়ে করা হচ্ছে আর এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই এনআরসি প্রক্রিয়াও এগিয়ে যাবে। বন্দোপাধ্যায় রাজ্য বিধানসভায় ঠুঁটো জগন্নাথ আইন সিএএ ২০১৯ এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণ করে থাকলেও এনআরসি তাতে আটকাচ্ছে না।  

তৃতীয়তঃ তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী জয় ঘোষণার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিরোধীদের উপর, বিশেষ করে বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস ও ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষ মোর্চা (আইএসএফ) কর্মী ও সমর্থকদের উপর অকথ্য অত্যাচার ও সন্ত্রাস শুরু করেছে বন্দোপাধ্যায়ের হার্মাদ বাহিনী। এই পরিপ্রেক্ষিত কে ব্যবহার করে, মিথ্যা খবর ছড়িয়ে, এই হিংসা কে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগিয়ে বিজেপি ও আরএসএস যেমন গোটা দেশে ধর্মীয় মেরুকরণের কাজটা ভাল করে সারতে পারছে, তেমনি এর ফলে কিন্তু মানুষের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে বিজেপির কাছে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। ফলে আগামীদিনে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রাজ্যে প্রধান বিরোধী হিসাবে বিজেপিই তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের প্রতিরোধে নেতৃত্ব দেবে আর এর ফলে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করবে। কোন বিকল্প বিরোধিতার জায়গা না থাকায় রাজ্যের রাজনীতির মেরুকরণ হবে দুই দক্ষিণপন্থী শিবিরের মধ্যে।  

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হতে গেলে বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাস থেকে যেমন দক্ষিণবঙ্গের গরিব মানুষ কে বাঁচাতে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার প্রগতিশীল ফ্যাসিবিরোধী শক্তির ঠিক তেমনি উত্তরবঙ্গে বিজেপি ও আরএসএস-র সন্ত্রাস থেকে গরিব মানুষ কে, সংখ্যালঘু সমাজ কে বাঁচাতে গেরুয়া শিবিরকেও সক্রিয় ভাবে নির্মূল করতে হবে। প্রধানতঃ সরকারি দল তৃণমূল কংগ্রেসের স্বেচ্ছাচারিতা যেমন প্রতিরোধ করতে হবে তেমনি কিন্তু বিজেপি কে প্রধান বিরোধী শক্তির জায়গার থেকে নির্মূল করতে হবে। জনগণ কে রোজগার, কৃষি সমস্যা, কারখানা আর চটকল বন্ধ হয়ে যাওয়া, লকডাউন করে মানুষ মারার চক্রান্ত, ইত্যাদির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামাতে হবে যাতে প্রগতিশীল আর ফ্যাসিবিরোধী শক্তিগুলো কে বন্দোপাধ্যায়ের লেজুড় হিসাবে না দেখা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী জয় যেমন বিজেপির ক্ষমতায় এসে গণহত্যা চালানোর প্রক্রিয়া কে একটু ঠেকিয়েছে তেমন আবার বিজেপি কে অনেক রাজনৈতিক অক্সিজেন দিয়েছে। এই মুহূর্তে সক্রিয় ভাবে বিজেপি কে প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করে তাকে প্রতিরোধ ও পরাজিত করার মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ হওয়ার সংগ্রাম যদি না শুরু হয় তাহলে এই সাময়িক জয়ের আনন্দ খুব তাড়াতাড়ি কর্পূরের মতন উবে যাবে।

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla