Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
খেলা শেষ হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার প্রচেষ্টায় মত্ত মোদী-শাহ-ধনখোর | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে গো-হারা হেরে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যে গর্তে সেঁধিয়ে যাবে না বরং তীব্র আক্রমণ শুরু করবে রাজ্যের জনগণের উপর এই সত্যটা মোটামুটি বোঝাই যাচ্ছিল নির্বাচনের পর থেকেই।  সোমবার, ১৭ই মে ২০২১, এই আশংকাটাই সত্য হল।। বহুদিন ধরে রাজ্যে “নির্বাচন-পরবর্তী হিংসা” বলে প্রচার চালিয়ে কল্কে না পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ এইবার তাঁদের পোষ্য কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান ব্যুরো (সিবিআই) কে ব্যবহার করে নতুন করে সাংবিধানিক একটা সঙ্কট সৃষ্টি করে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কাণ্ডারির আসনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখোর। সঙ্গে দোসর শুভেন্দু অধিকারী। বোঝা যাচ্ছে যে ২রা মে কোনো খেলা শেষ হয়নি। খেলাটার রাশ এইবার বিজেপির হাতে, মোদী আর শাহের হাতে।   

সোমবারে সিবিআই এর হাতে রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা——পরবর্তীকালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে আবার বেরিয়ে আসা——শোভন চ্যাটার্জি কে গ্রেফতার হওয়ার পরে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে সেটাকে ব্যবহার করে যে বিজেপি লাভের গুড় খেতে চলেছে তা স্পষ্ট হয়েছে। ধনখোর যে ভাবে নির্লজ্জের মতন, একজন বিজেপি নেতার মতন, টুইট করছেন, তার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে মোদী সরকারের ষড়যন্ত্র অনেক গভীরে।  

পাঁচ বছর আগের বিস্মৃত প্রায় নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিওতে টাকা নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধেই কেন আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বা অধিকারী আর মুকুল রায়ের মতন বর্তমানে গোমূত্র দিয়ে স্নান করে বিজেপিতে যোগদান করা নারদ কাণ্ডের অভিযুক্তদের গ্রেফতার তো দূরের কথা নামও চার্জশিটে নেই কেন তাও জনগণের সামনে স্পষ্ট। তবুও এই খেলা চলছে কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় উত্তেজিত হয়ে বিজেপির প্ররোচনায় যে পা দেবেন ও একটা সাংবিধানিক কেলেঙ্কারি করবেন সে কথা মোদী আর শাহ ভাল করেই জানেন। তাই বন্দোপাধ্যায় যে মুহূর্তে হাকিম, মুখোপাধ্যায় আর মিত্রের জন্যে, এবং কিছুটা হলেও চ্যাটার্জির জন্যে নিজে নিজাম প্যালেসে গিয়ে ধর্ণা দিলেন, যে মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা দলে দলে নিজাম প্যালেসে পৌঁছালো বিক্ষোভ দেখাতে, ঠিক সেই মুহূর্তেই ধনখোর টুইট করে বন্দোপাধ্যায় কে হুমকি দিলেন। কেন্দ্র কে জানালেন যে আইন কানুন ব্যবস্থা নাকি ভেঙে পড়ছে রাজ্যের।  

এর মাধ্যমেই মোদী সরকার অস্ত্র খুঁজে পাচ্ছে বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্যে। এত দিন ধনখোর সারা রাজ্যে বিজেপি নেতাদের সাথে চষে বেরিয়েছে আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে অজুহাত তুলে। এবার সংবিধানের শাসন যে সঙ্কটে, অর্থাৎ যে সংবিধান এক তরফা ভাবে কেন্দ্রের হাতে একচেটিয়া ক্ষমতা তুলে দিয়েছে সেই সংবিধানের শাসন যে সঙ্কটে এই অজুহাত তুলে ধনখোর রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পক্ষে ওকালতি করতে পারেন। এর ফলে বিজেপি অক্সিজেন পাবে কারণ মোদী আর শাহের হাতে কাশ্মীরের মতন পশ্চিমবঙ্গের শাসনের রাশ থাকলে এই রাজ্যের সমস্ত সিন্ডিকেট, মাফিয়া, তোলাবাজের থেকে বিজেপি হিস্যা পাবে। এর সাথে সাথে তাদের আসল মতলবও প্রকাশ পাবে।

কেন পশ্চিমবঙ্গ কে নিয়ে বিজেপির এত লালসা? কেন এই বঙ্গভূমি কে দেখে গুজরাটি মোদী আর শাহের জিভ দিয়ে লালা ঝরে? তার কারণ হল পশ্চিমবঙ্গ কে বিজেপি দখল করতে পারলে যে শুধুই তাদের পিতৃপ্রতীম সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) বহুদিনের স্বপ্ন পূর্ণ হবে, যার জন্যে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি একদিন বাংলা ভাগ করিয়েছিলেন, বঙ্গবাসী কে হিন্দি ভাষা, উত্তর ভারতীয় হিন্দু সংস্কৃতি ও ব্রাক্ষণত্ববাদী হিন্দুরাষ্ট্রের পদানত করাতে তাই নয়, তেল, গ্যাস, কয়লা, খনিজ পদার্থ, জল সম্পদ, জমি, বনসম্পদে ভর্তি রাজ্যের সম্পদ কে বড় বড় কর্পোরেটদের সস্তায় বা বিনামূল্যে দিয়ে প্রচুর কাটমানি আয় করতে পারবেন মোদী আর শাহ। এর সাথে সাথে গৌতম আদানি ও মুকেশ আম্বানি কে বাংলাদেশ, মায়ানমার হয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় প্রতিপত্তি বিস্তারের সুযোগও সস্তায় করে দেবে মোদী সরকার।  

জনগণের সম্পদের এমন লুঠের বিরুদ্ধে যেন মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে না পারে তাই চলছে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী (এনপিআর) করে জাতীয় নাগরিকত্ব পঞ্জী (এনআরসি) তৈরির কাজ, যাতে কোটি কোটি দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু মানুষের নাম কাটা যাবে। এনআরসি-র ফলে সস্তা, রাষ্ট্রহীন দাসশ্রমিকে পরিণত হবেন। এই এনআরসি রোখার কোন ক্ষমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেই কারণ নাগরিকত্ব কেন্দ্রের বিষয় আর রাজ্য সরকার সেখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্প কে মানা করতে পারে না। তবুও মোদী ও শাহ চান যে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়ে, মানুষের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে, কাশ্মীরের মতন লকডাউন করে পশ্চিমবঙ্গের বুকে এনআরসি করতে।   

এর ফলে চরম আর্থিক সঙ্কট, লকডাউনের ফলে সৃষ্ট হওয়া জীবন ও জীবিকার সমস্যা, আর করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ভেঙে পড়া জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা—— যার ফলে হাজার হাজার মানুষ রোজ অক্সিজেনের অভাবে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে খুন হচ্ছেন——ও মোদী সরকারের আর ভারতের শাসকশ্রেণীর অন্যান্য কুকীর্তির থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে। একদিকে যেমন এনআরসি হওয়ার ফলে যে অসংখ্য মানুষ বেনাগরিক হবেন, তাঁদের অধিকাংশ কে রাষ্ট্রহীন সস্তা দাস-শ্রমিকে পরিণত করা যাবে আর অন্যদিকে যাঁরা নাগরিক থেকে যাবেন তাঁরা এই এনআরসি কাণ্ডের ফলে যে প্রতিরোধ আন্দোলনের সৃষ্টি হবে, তার দিকে দেখবেন আর ভুলে যাবেন যে তাঁদেরও কর্মসংস্থান নেই, তাঁদেরও সামাজিক সুরক্ষা নেই আর কোন কারণে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে, তাঁদেরও অক্সিজেন নেই।

এই ভাবে সাধারণ মানুষ কে, যাদের আগেই সামাজিক দূরত্বের নাম দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার চেষ্টা আন্তর্জাতিক ভাবে বিশ্বের একচেটিয়া ও লগ্নি পুঁজির মালিকেরা করেছে, ভাগ করে, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সম্পদ লুঠ করে এখানকার জনগণ কে কর্পোরেট পুঁজির দাস-শ্রমিক বানিয়ে আদানি আর আম্বানিদের ভাঁড়ারে কোটি কোটি টাকা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী আর শাহ। তাই বিজেপি আর আরএসএস-র পশ্চিমবঙ্গ কে চাই।

আজ বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের মতন একটি চরম সুবিধাবাদী ও নীতিহীন দক্ষিণপন্থী দল যেমন বিজেপি ও আরএসএস-র পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার চক্রান্ত কে রুখতে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে না তেমনি সরকারি বামপন্থী ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) [সিপিআই(এম)] আর তার দোসরেরাও কিন্তু নির্লজ্জের মতন বিজেপির দালালি করা ছাড়বে না। ফলে আজ পশ্চিমবঙ্গ কে গায়ের জোরে, সংবিধানের অপব্যবহার করে দখল করার যে প্রচেষ্টা বিজেপি ও আরএসএস করে চলেছে ধনখোর কে শিখন্ডি করে, তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে হবে প্রগতিশীল বামপন্থীদের, যাঁরা শুধু কথায় না কাজেও করে দেখাবেন, আজ রাস্তায় নামে দরকার ও বিজেপি ও আরএসএস। তা না করতে পারলে বঙ্গবাসীর চরম বিপদ।

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla