ছত্তিসগড়ে আদিবাসীদের জল-জমি-জঙ্গল বাঁচানোর লড়াই প্রায় চার দশকের। প্রতিদিন সেখানে “মাওবাদী দমনের” নাম করে ভারত সরকার আদিবাসীদের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে নানা কলাকৌশলে ওই অঞ্চলের জল-জমি-জঙ্গল দখলের লোভেই, এমনই দাবি বস্তারের আদিবাসীদের।
ছত্তিসগড়ে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে এখন ট্যাক্টিকাল কাউন্টার-অফেন্সিভ ক্যাম্পেনিং (TCOC) চলছে। বস্তার পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) সুন্দররাজের মতে, এই অভিযান মূলত ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাস অবধি চলে। এই অভিযান হল মাওবাদীদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সরকারি ঘাঁটিতে আক্রমণের সময়। এই সময়, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)গেরিলারা নিজেদের প্রভাবে থাকা অঞ্চল আরো বাড়াতে থাকে। বস্তার আইজির মতে, এই অভিযান মাওবাদীরা ২০১৩ সাল থেকেই চালিয়ে আসছে।
২০১৭ থেকে ভারতের হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদের পাণ্ডা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর নেতৃত্বাধীন সংসদীয় দল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার এই সময়ে, তাদের নীতি অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের ভেতরে দেশের খেটে-খাওয়া মানুষের উপর বেশি মাত্রায় আক্রমণ নামিয়ে এনেছে, বিশেষ করে প্রান্তিক দলিত-আদিবাসী ও সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপরেই এই আক্রমণ নামছে। যার বিরোধিতায় বহু খেটে খাওয়া, গণতন্ত্র-প্রিয় মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পথে নেমেছে বা নামছে।
এ বছরের শুরু থেকেই আরএসএস-বিজেপি সরকার তাদের হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদী কর্মসূচী অনুযায়ী ‘আক্রমণাত্মক’ রূপ নিয়ে নানা রকম বিষাক্ত প্রচারের মাধ্যমে খেটে খাওয়া মানুষের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে। বিশেষ করে ইসলাম বিদ্বেষী প্রচারের মাধ্যমে দেশের ব্যাপক গরিব মানুষের সাথে, যাঁদের বৃহৎ অংশ হল দলিত, আদিবাসী ও শোষিত জাতির হিন্দু (ওবিসি), মুসলিম ধর্মালম্বী শ্রমজীবী জনগণের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছে ––এমনটাই দেশের গণতান্ত্রিক অধিকারের সংগ্রামের সাথে জড়িত মানুষরা অভিযোগ করছেন। ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েই চলেছে বলে সম্প্রতি উদ্বেগ জানিয়েছেন খোদ মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
গণতান্ত্রিক মহলের দাবি অনুযায়ী, ভারতের আরএসএস-বিজেপি সরকার এই বছরের শুরু থেকেই বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে হিজাব বিতর্ক, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মিশনারী স্কুল গুলিকে আক্রমণের মাধ্যমে সংখ্যালঘু মানুষের পরিচয় কে নিশানা করে, তাদের অন্তরের ধর্মীয় ‘সত্ত্বা’ জাগিয়ে দেশজুড়ে এক সাম্প্রদায়িক অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে। তাদের মতে, আকাশ ছোঁয়া মূল্য বৃদ্ধি, অসংখ্য মানুষের কাজ হারানোর ফলে, শ্রমজীবী মানুষের রুজি রুটির অভাব থেকে নজর ঘোরানোর জন্যেই আসলে এইগুলো করা হচ্ছে।
এমনকি আরএসএস-বিজেপি সরকার এতেই ক্ষান্ত থাকেনি। ‘কাশ্মীর ফাইলস’-এর মতন সাম্প্রদায়িক ও হিংসাত্মক সিনেমা বার করে সংখ্যাগুরু হিন্দুদের ভেতরের হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদী অনুভূতি জাগিয়ে তোলার চেষ্টা চালিয়েছে, যাতে সংখ্যালঘু খেটে খাওয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে চরম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দলিত, আদিবাসী ও ওবিসি সম্প্রদায়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের মস্তিস্ক থেকে সরিয়ে দেওয়া যায় তাদের কাজ হারানোর আসল কারণগুলি। নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, যার জন্য দায়ী কেবল মাত্র আরএসএস-বিজেপি সরকারের নির্ভেজাল কর্পোরেট প্রেম ও নয়া-উদারনৈতিক অর্থনীতির কাছে দেওয়া দাসখৎ, তার থেকে নজর ঘোরাতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানো হচ্ছে নানা রাজ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর হামলা করে, তাঁদের বাড়ি ও দোকান প্রভৃতি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে, তাঁদের নিজের ভূমিতেই উদ্বাস্তু করে দিয়ে।
সম্প্রতি, রাম নবমী ও হনুমান জয়ন্তীর মিছিল ঘিরে রাজধানী দিল্লী সহ নানা রাজ্যে মুসলিম-বিরোধী সাম্প্রদায়িক হিংসা উস্কে দেওয়া হয়েছে। গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ থেকে শুরু করে রাজধানী দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরী অঞ্চলে মুসলিমদের “দাঙ্গাকারী” বলে তাঁদের বসত ভিটে, মসজিদ ও দোকান বিজেপি সরকার ভেঙে দিয়েছে বুলডোজার চালিয়ে। দিল্লীর ঘটনায় তো কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের উস্কানিতে শহরের উত্তরাঞ্চলের পৌরসভা সুপ্রিম কোর্টের স্টে অর্ডারকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে শ্রমজীবী মুসলিমদের বস্তি।
দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরীর ঘটনায় যেমন বিজেপির হাত কে শক্তিশালী করেছে সেখানকার আম আদমি পার্টির (আপ) সরকার ও তার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল, তেমনি অন্যান্য জায়গায় নিশ্চুপ ও নিষ্ক্রিয় থেকে বিজেপির বুলডোজার চলার রাস্তা, গরিবের বসত ভিটে, তাঁদের আয়ের উৎস ছোট ছোট দোকানগুলো গুঁড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে তাবড় তাবড় সব মূলস্রোতের বিরোধীরা।
পশ্চিমবঙ্গেও তাই হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের সহায়তায়। হাওড়া, বাঁকুড়া জেলা সহ বিভিন্ন জায়গায়, রামনবমী উপলক্ষে হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদী সংগঠন আরএসএস দ্বারা প্রভাবিত তৃণমূল কংগ্রেসের বহু নেতাদের বিজেপির সাথে পাল্লা দিয়ে সশস্ত্র মিছিল করাকে কেন্দ্র করে। পশ্চিমবঙ্গেও ‘মিছিলে ঢিল ছোড়া’ কে কেন্দ্র করে যেমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল হাওড়া জেলার শিবপুরে বা বাঁকুড়ার মাচানতলায়, ঠিক সেই একই কায়দায়, দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরীকে অচল করা হয়েছে এবং পুরো বিষয়টাই পরিকল্পনা মাফিকই সারা দেশ জুড়ে চলছে–এমনই অভিযোগ শোনা যাচ্ছে দেশের বুদ্ধিজীবী ও গণতান্ত্রিক মানুষের তরফ থেকে।
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) [সিপিআই(এমএল)] লিবারেশন নেতা রবি রাই, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) [সিপিআই(এম)] নেত্রী বৃন্দা কারাট, ও বেশ কিছু বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন কর্মীরা বাম হাতে সুপ্রিম কোর্টের স্টে অর্ডার ধরে আর ডান হাত দিয়ে মোদী সরকারের বুলডোজার না রুখলে, আরো বহু ক্ষয় ক্ষতি হতে পারতো দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরী অঞ্চলে সেই মুহূর্তে।সিপিআই(এম) এর কারাট জানিয়েছেন যে এই বুলডোজার দিল্লীর কোনো এমএলএ, এমপি ছাড়াই রুখে দেওয়া গেছে।দিল্লীর কেজরীওয়াল সরকার এই বুলডোজার চালাতে বিজেপির শাহ কে সাহায্য করেছে।কারাটের এই বক্তব্য দেখলে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ২০২০ সালেও দিল্লীর কেজরীওয়াল সরকার শাহীনবাগ আন্দোলন বন্ধ করতে আরএসএস-বিজেপির লাগানো ‘দাঙ্গা’ (সেটা ছিল রাষ্ট্রীয় মদতে মুসলিম নিধন) নিয়ে চুপ ছিল। উল্টে দাঙ্গার প্ররোচনা দেওয়ার নামে, দিল্লী পুলিশের ছাত্র নেতা উমর খালিদ ও অন্যান্যদের মিথ্যে মামলায়, কালা আইন বেআইনী কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (ইউএপিএ) এর ধারায়, কেন্দ্রের আরএসএস-বিজেপি সরকারের নির্দেশে, জেলে ভরাকে সমর্থন জানিয়েছিল জন সম্মুখে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে যখন পশ্চিমবঙ্গের দেউচা-পচামীতে কয়লা খনির জন্যে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিপক্ষে গিয়ে, বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিআই(এম) আদিবাসীদের পক্ষ নিচ্ছে, ২০০৬ আদিবাসী আইন তুলে ধরছে, তখনই কিন্তু বস্তারে আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ঠিক এর উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে। সেখানে এই কংগ্রেস আর বিজেপি সম্মিলিত ভাবে আদিবাসীদের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
দক্ষিণ বস্তারের আদিবাসীদের অভিযোগ অনুযায়ী গত ১৫ই এপ্রিল সেখানকার কংগ্রেস সরকার ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, ড্রোনের সাহায্যে আকাশপথে বোমা নিক্ষেপ করেছে আদিবাসীদের উপরে। বাজারি সংবাদ মাধ্যমগুলো কিন্তু সিরিয়া বা গাজার জনগণের উপর মার্কিন বা জায়নবাদী ইজরায়েলি ড্রোন হামলার মতন এই ঘটনা কে নিজেদের খবরে স্থান দেয়নি। যদিও ছত্তিসগড়ের স্থানীয় কিছু সংবাদপত্রে এই খবর বের হয়, কিন্তু তারা সরকারের চাপে পড়ে সেটা কে “মাওবাদীদের হামলা” বলে দেখিয়েছে।
বস্তারের কিছু আঞ্চলিক খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে সেখানকার আদিবাসীরা জানিয়েছে, “গত ১৫ তারিখ রাত ১টা থেকে ২টার ভেতরে, আকাশপথে ড্রোনের সাহায্যে দক্ষিণ বস্তারের ঘন জঙ্গলে ৩৫ থেকে ৪০টি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার যন্ত্র সামগ্রী তারা একত্র করে রেখেছে।” এই বোমা নিক্ষেপের ফলে মাটিতে বিরাট গর্ত হয়ে গেছে ও সেখানকার গাছপালারও নাকি অনেক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
বস্তারের আদিবাসীদের আরো অভিযোগ, “ভারত সরকার এই বোমা তাদের উপরেই নিক্ষেপ করেছে, তাদের রুজিরুটির অধিকার কেড়ে নিতে বস্তারের জল-জমি-জঙ্গল কে ক্ষতি করতে।” দিনের বেলায় এই বোমা নিক্ষেপ করলে তাঁদের প্রাণও যেতে পারতো এমনটাই আদিবাসীদের একাংশ মনে করছেন কারণ ঐ জঙ্গলের ভেতরেই আদিবাসীরা পেটের টানে তেন্দুপাতা কুড়োতে বা মহুয়া জোগাড় করতে যান প্রতিদিন দিনের বেলাতে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই নিয়ে কোন ‘মূলস্রোতের’ রাজনৈতিক দলের কোন বিবৃতি দেখা যায়নি এখনো পর্যন্ত, তবে সামাজিক মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সিপিআই(মাওবাদী)পার্টির ‘পূর্ব বস্তার এরিয়া কমিটির’ পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের তরফ থেকে সেই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “ভারত সরকারের রাতের অন্ধকারে আকাশ পথের বোমা নিক্ষেপের ফলে তাদের আসল নৃশংস চেহারা আবারও ফুটে বেরিয়ে এসেছে, তারা যে বস্তারের আদিবাসীদের প্রতিরোধে ভীত তা প্রমাণিত হয়েছে।”
বস্তারের আঞ্চলিক খবরের সূত্র অনুসারে, গ্রামবাসীরা বলেছে “ভারত সরকার তাঁদের বহুদিন ধরেই মেরে ফেলতে চাইছে, তাঁদের মারতেই ঐ বোমা আকাশ পথে নিক্ষেপ করেছে, তাছাড়া ঐ বোমা নিক্ষেপের কোন কারণ নেই সেখানে।” রাস্তা নির্মাণের কর্মীরা এ বিষয় কোনো প্রতিক্রিয়া ঠিকঠাক ভাবে না দিতে রাজি হলেও, তাঁরা আঞ্চলিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “বস্তারের আদিবাসীদের এই লড়াই বেঁচে থাকার লড়াই চলছে।” যদিও বস্তার জেলা আইজি সুন্দররাজ গ্রামবাসীদের সমস্ত অভিযোগ নসাৎ করেই এর দায় পুরোপুরি মাওবাদীদের ঘাড়েই চাপিয়েছেন এবং তিনি আরো জানিয়েছেন, “মাওবাদীরা ট্যাক্টিকাল কাউন্টার অফেন্সিভ ক্যাম্পেনিং(TCOC)-এর পার্ট হিসেবেই এই সমস্ত ব্যবহার করছে, গ্রামবাসীদের বিভ্রান্ত করতে।”
ভারত সরকারের ছত্তিসগড়ের বস্তার সহ দেশের নানা রাজ্যের দরিদ্র আদিবাসীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ আগেও শোনা গেছে, সেই ২০০৫ সালের সালোয়া জুডুম অভিযানের সময়ের থেকে। এমনকি ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানোরও অভিযোগ আদিবাসীরা করেছেন। তবে, আজ নিজের দেশের নাগরিকের উপরেই ক্ষমতায় আসীন মোদী সরকারের আকাশ পথে বোমা নিক্ষেপ থেকে বুলডোজার চালানো সরকারকে সাধারণ মানুষের বহু প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে।
হিংসাত্মক “মাওবাদী” রাজনীতি প্রসঙ্গে গণতান্ত্রিক পরিসরে নানা মতপার্থক্য থাকলেও, নিজেরই দেশের সাধারণ মানুষের উপরে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন ও রুজি রুটির নূন্যতম অধিকার হ্রাস পাওয়ার ফলেই দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ যে আজ রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিপরীত পথে চলতে, উগ্র বাম আন্দোলনের সাথে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছেন সেই অভিযোগ দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত মানুষরা করছেন।
দেশের সরকার যদি বস্তারের আদিবাসীদের জল-জঙ্গল-জমি কর্পোরেটদের স্বার্থে দখল করতে মানুষের উপর ড্রোন দিয়ে বোমা নিক্ষেপ করে বা দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরী অঞ্চলে বাংলাদেশী আর রোহিঙ্গা আখ্যা দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের বসত ভিটে আর দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়, এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, উর্দ্ধগামী নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, প্রভৃতির থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে যদি জায়গায় জায়গায় সাম্প্রদায়িক হিংসায় প্ররোচনা দেয়, তাহলে কি সেই সরকারের উপর বেশি দিন জনতার ভরসা থাকবে? দেশের আইন শৃঙ্খলা ও সামাজিক সম্প্রীতির পক্ষে কি তা মঙ্গলজনক হবে? এই নিয়ে দেশের বিশিষ্ট গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতা কর্মীরা চিন্তিত থাকলেও, আদতে তা সরকারের উপরেই নির্ভর হয়ে আছে। সরকার দেশের মানুষের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ থামাবে নাকি আরো দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে, তার উপরেই নির্ভর করছে ভবিষ্যতের গতিপথ।