Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার স্পর্ধার জন্যেই কি মহুয়া মৈত্র কে আক্রমণ করছে বিজেপি? | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর শাসক ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পরিচিত, ভারতের বৃহত্তম পুঁজিপতিদের অন্যতম ও আদানি এন্টারপ্রাইজেস-র মালিক গৌতম আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যে বর্তমানে লোকসভার এথিক্স বা নৈতিক কমিটির তদন্তের সম্মুখীন হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছেন যে মৈত্র নাকি আদানি গোষ্ঠীর প্রতিদ্বন্দ্বী পুঁজিপতি দর্শন হিরানান্দানি-র থেকে দামি বিলাসবহুল সামগ্রী নিয়ে তাঁর হয়ে লোকসভায় আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। অভিযোগ যে মৈত্র তাঁর সাংসদ পোর্টালের লগইন করার তথ্যও হিরানান্দানি কে দিয়েছিলেন।

বিজেপি-র লোকসভা সাংসদ বিনোদ কুমার সোনকারের নেতৃত্বাধীন ১৫-সদস্যের এথিক্স কমিটি বর্তমানে খতিয়ে দেখবে যে মৈত্র কি সত্যিই হিরানান্দানি গোষ্ঠীর থেকে পাওয়া দামি বিলাসবহুল সামগ্রীর বিনিময়ে আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যে নিজের লগইন তথ্য হিরানান্দানি কে দিয়েছিলেন এবং সেই গোষ্ঠীর তরফ থেকেই প্রশ্নগুলো তাঁর পোর্টালে আপলোড করা হয়।

ভারতের মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যম মৈত্র কে নিয়ে নানা প্রশ্ন তুললেও, বা ঘটনাটিকে বেশ চাঞ্চল্যকর করে উপস্থিত করলেও, তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কে হয় উপেক্ষা করেছে আর না হয় সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।

আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যে বিজেপি কেন ক্ষিপ্ত?

দুবের অভিযোগ, যার সপক্ষে মৈত্র-র প্রাক্তন বন্ধু ও আইনজীবী জয় আনন্দ দেহদ্রাই ও হিরানান্দানি দাঁড়িয়েছেন, যদি সত্যিও হয়, যদি মৈত্র একটি পুঁজিপতির থেকে পাওয়া উপহার ও উৎকোচের বিনিময়ে অন্য একটি পুঁজিপতির স্পষ্টতই দৃশ্যমান দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করে থাকেন সংসদে, সে ক্ষেত্রে কার অভিযোগ করা উচিত ছিল? বিজেপি সাংসদের না সেই পুঁজিপতির? যদি সেই পুঁজিপতির “সুনাম” নষ্ট করার “চক্রান্তে” মৈত্র অংশীদার হন, তাহলে কি বিজেপির সেই পুঁজিপতির হয়ে ওকালতি করতে নামা উচিত?

এর আগে সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তাঁর বিজেপির সাথে আদানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে পারদ চড়িয়ে কংগ্রেস পার্টির ওয়ানাড কেন্দ্রের সাংসদ রাহুল গান্ধী কিছুদিনের জন্যে নিজের পদ হারিয়েছিলেন। যে সব বিরোধী সাংসদেরা আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁদের উপর কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলো কে লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু কোনো ভাবেই আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পাহাড়ের দিকে ফিরেও তাকায়নি এই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো – যেমন কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান ব্যুরো (সিবিআই) ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

বারবার বিরোধী শিবির নানা সময়ে ও নানা তথ্য তুলে ধরে দেখিয়েছেন যে মোদী আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার তাগিদ থেকে নানা ধরণের আর্থিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ কে। দেশের নানা সম্পদ একেবারে বিনামূল্যে আদানি গোষ্ঠীর হাতে যেমন তুলে দেওয়া হচ্ছে, গোষ্ঠীটির স্বার্থে ভারতের বিদেশনীতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কও নির্ধারণ করা হচ্ছে।

আদানি গোষ্ঠী শুরুর থেকেই বিতর্কিত একটি গোষ্ঠী। কোটি-কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়ার যে অভিযোগ আদানির বিরুদ্ধে উঠেছে, বিশেষ করে কারসাজি করে আমদানিকৃত কয়লার মূল্য বেশি দেখিয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করার মতন অভিযোগ, তার ফলে দেশের কোষাগারের ক্ষতি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ কে বেশি টাকা বিদ্যুতের মাশুল গুনতে হয়েছে।

অথচ দুবে বা অন্য কোনো বিজেপি সাংসদ দেশের অর্থনীতি কে এই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগের কারণে, বা শেয়ার বাজারে কারচুপি করার অভিযোগের কারণে কিন্তু আদানির বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত দাবি করেননি। সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ভারতের স্টক এক্সচেঞ্জ বোর্ড (সেবি) আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কারচুপির মামলায় যে তদন্ত শুরু করেও শেষ করতে অপারগ, সেই নিয়েও কিন্তু বিজেপি কোনো শব্দ উচ্চারণ করেনি। বরং জানুয়ারী ২০২৩-এ যখন আদানির বিরুদ্ধে কারচুপি করে শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগ করে মার্কিন স্বল্প মেয়াদী শেয়ার বিক্রেতা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি তদন্তমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তখন কিন্তু আদানির সাথে সুর মিলিয়েই এই পুঁজিপতির সমালোচনা কে ভারতের উপর আক্রমণ হিসাবে দেখাবার চেষ্টা করে বিজেপি।

যে দেশে অনাদায়ী কর্পোরেট ঋণের পরিমাণ আকাশ ছোঁয়া, আর প্রতি বছরেই তা কোনো না কোনো কারণে যে ভাবে মাফ করে দেওয়া হয়, যে দেশে বেসরকারি হিসাবে—সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনোমি বা সিএমআইই-র হিসাবে—অক্টোবরের মতন উৎসবের মাসেই বেকারত্বের হার ১০.৮%, যেখানে কৃষি পণ্যে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লক্ষ লক্ষ গ্রামীণ গরিব সর্বহারা হয়ে শহরে চলে আসছেন, সেখানে যে দলের নামে “জনতা” আছে সেই দল কী করে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন ছেড়ে, তাঁদের স্বার্থের কথা বাদ দিয়ে আদানির হয়ে ওকালতি করতে নামে?

ঘটনা হল আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যে আজ যে ভাবে মৈত্র কে নিশানা করে আক্রমণ চালানো হচ্ছে নানা কায়দায়, বা অতীতে কংগ্রেস পার্টির গান্ধীকে যে হেনস্থা করা হয়েছে, এর থেকে বারবার বিরোধীদের অভিযোগের—যে মোদী ও বিজেপি আসলে আদানির কর্মচারী হিসাবে কাজ করছে—সারবত্তা কি প্রমাণ হয় না?

সংসদে প্রশ্ন তোলার প্রক্রিয়া

সংসদে আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যে মৈত্র ঘুষ নিয়েছেন বলে যে অভিযোগ বিজেপি তুলেছে, তার সারবত্তা নিয়েও অনেক প্রশ্ন ওঠে। আর যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে, সেটা হল সংসদে প্রশ্ন করার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল এবং এর ফলে অনেক সাংসদই জরুরী প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারেন না।

সংসদ অধিবেশনে দিনের প্রথম ঘন্টাটি প্রশ্নত্তোর পর্ব হিসাবে চিহ্নিত। এই সময়ে সাংসদেরা সরকারের নীতি ও কাজকর্ম নিয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন করে থাকেন। মূলত চার ধরণের প্রশ্ন এই পর্বে সাংসদেরা করে থাকেন – তারকাচিহ্নিত (স্টার্ড) প্রশ্ন, অতারাঙ্কিত (আনস্টার্ড) প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত নোটিশ (শর্ট নোটিশ) প্রশ্ন ও প্রাইভেট সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন।

স্টার্ড প্রশ্ন 

স্টার্ড প্রশ্ন বা তারকাচিহ্নিত প্রশ্নগুলোর জন্যে সাংসদেরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কাছ থেকে মৌখিক উত্তর দাবি করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রী বা রাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে এসে এই প্রশ্নের জবাব দেন, ও এর ফলে এই প্রশ্নের উপর সাপ্লিমেন্টারি বা সম্পূরক প্রশ্নও সাংসদেরা জানতে চাইতে পারেন। প্রতি দিনে ২০টি স্টার্ড প্রশ্ন আলোচনার জন্যে বরাদ্দ করা হয়। এই প্রশ্ন সবুজ কাগজে করা হয়ে থাকে।

এই স্টার্ড প্রশ্ন করতে গেলে একজন সাংসদকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে অন্তত ২০ দিনের নোটিশ দিতে হয় লোকসভা সচিবালয়ের মাধ্যমে।

আনস্টার্ড প্রশ্ন

আনস্টার্ড বা অতারাঙ্কিত প্রশ্নের জবাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে লিখিত ভাবে সংসদ কে জানাতে হয়। এই প্রশ্ন সাদা কাগজে জানানো হয়। দিনে ২৩০টি আনস্টার্ড প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়। এর সাথে ২৫টি প্রশ্ন সেই সব রাজ্য সংক্রান্ত করা যেতে পারে যা বর্তমানে কেন্দ্রীয় শাসনাধীন রয়েছে। ফলে এক দিনে মোট ২৫৫টি আনস্টার্ড প্রশ্ন করা যেতে পারে।

শর্ট নোটিশ প্রশ্ন 

যে কোনো জরুরী জনস্বার্থ বিষয়ক প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত (শর্ট) নোটিশে সংসদে উত্থাপন করা যেতে পারে। শর্ট নোটিশের প্রশ্নগুলোরও মন্ত্রীরা মৌখিক উত্তর দেন এবং এই ধরণের প্রশ্ন কবে উত্থাপন করা হবে সেটা স্পিকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। এই প্রশ্নগুলো হালকা গোলাপি রঙের কাগজে জানানো হয়।

প্রাইভেট সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন 

যে কোনো সাংসদ কোনো অন্য সাংসদ কে তাঁর সাথে সম্পর্ক আছে এমন কোনো কমিটি, প্রস্তাব, বিল অথবা কোনো সংসদীয় কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন। এই ধরণের প্রশ্ন হলুদ কাগজে করা হয় ও মন্ত্রীদের থেকে যে ভাবে উত্তর চাওয়া হয়, সেই ভাবেই প্রাইভেট সদস্যদের কাছ থেকেও উত্তর চাওয়া হয়। তবে কবে ও কখন এই প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে সেটা স্পিকার ঠিক করেন।

প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ 

যদিও এই উপরোক্ত চার ধরণের প্রশ্ন সাংসদেরা সংসদে করতে পারেন, এবং এর জন্যে তাঁরা অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করে সেই প্রশ্ন সচিবালয় কে পাঠিয়ে থাকেন, এর কোনো গ্যারান্টি নেই যে কোনো সাংসদ কোনো প্রশ্ন পাঠিয়েছেন বলেই সেই প্রশ্ন সংসদে উত্থাপন করা হবে।

প্রথমত, প্রশ্ন ছাড়াও সাংসদদের মন্ত্রীর নাম, কত তারিখে সেই প্রশ্ন উত্থাপন করতে হবে সেই তথ্য সহ নানা ধরণের তথ্য জানাতে হয়। প্রশ্ন নথিবদ্ধ করার পদ্ধতিতে ত্রুটি থাকলে সেই প্রশ্ন নাকচ করে দিতে পারে সচিবালয়। এ ছাড়াও একদিনে পাঁচটির বেশি প্রশ্ন কোনো সাংসদ লোকসভায় করতে পারেন না।

দ্বিতীয়ত, প্রশ্ন নথিবদ্ধ হওয়ার পরে সেটি একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যালট ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে চয়নিত হয়। চার ধরণের প্রশ্নের চারটি আলাদা স্বয়ংক্রিয় ডায়েরি ব্যবস্থা থাকে এবং সেখানে একই মন্ত্রীর কাছে একই দিনে কতগুলো প্রশ্ন তোলা যাবে সেটা নির্ধারিত হয়।

তৃতীয়ত, প্রশ্নটির চরিত্রের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়। প্রশ্নটি কোনো সরকারি নীতির ব্যাখ্যা চাইতে পারে না, কোনো ধরণের অসংসদীয় বা বিতর্কের বিষয় নিয়ে হতে পারে না, কোনো বিচারাধীন বিষয় বা যা নিয়ে প্রশ্নোত্তর হয়ে গেছে অথবা ভারতের সাথে কোনো বৈদেশিক রাষ্ট্রের সম্পর্ক কে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রশ্ন হতে পারে না।

এর ফলে, একজন সাংসদ যদি প্রশ্ন নথিভুক্ত করিয়েও থাকেন তাহলে এমনও হতে পারে যে গোটা একটি অধিবেশনে তাঁর প্রশ্ন উত্থাপিত হল না বা একই সাংসদের একাধিক প্রশ্ন উত্থাপিত হল। এই স্বয়ংক্রিয় ব্যালট ব্যবস্থার ফলে অনেক সাংসদ রীতিমত চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলোর থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদায় করতে পারেন না।

মহুয়া মৈত্র প্রসঙ্গে

মৈত্র যদি হিরানান্দানির থেকে ঘুষ খেয়ে নিজের লগইন তথ্য সেই পুঁজিপতির হাতে তুলে দিয়েও থাকেন, তাহলেও তাঁর তোলা প্রশ্ন যে সর্বদাই নির্বাচিত হবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। ফলে, সংসদের উপরোক্ত নিয়মের বাইরে গিয়ে যদি মৈত্র আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ পেয়ে থাকেন তাহলে সেটা সচিবালয় ও স্পিকারের দোষ। তাঁদের তৈরি ব্যবস্থার দোষ। 

মৈত্র ঘুষ খেয়েছেন কিনা সেটা এখন তদন্ত সাপেক্ষ। তবে যেটা প্রকাশ্যে এসেছে সেটা হল সংসদে আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করলে, মোদী সরকারের এই পুঁজিপতির প্রতি অঢেল প্রেম নিয়ে কোনো প্রশ্ন করলে বিজেপি আদানি গোষ্ঠীর দারোয়ান হিসাবে বিরোধীদের আক্রমণ করবে, এবং বিরোধী সাংসদদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেবে। 

মৈত্র যদি দোষী হন তাহলে তাঁর যথাযত শাস্তি—বিশেষ করে সংসদের সম্মান কে ভুলুন্ঠিত করার জন্যে—অবশ্যই কাম্য। কিন্তু তার আগে, সংসদে মোদী সরকারের আদানি কে রক্ষা করতে আদা-জল খেয়ে লেগে পড়ার কারণও অনুসন্ধান করা দরকার। সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর কে দমন করা, বিরোধী সাংসদদের পান থেকে চুন খসলেই সাসপেন্ড করা বা একেবারে বরখাস্ত করা, প্রভৃতির তদন্তও দরকার। 

সংসদ সরকারের খেলার মাঠ নয়, বরং সেটা বিরোধীদের কাছে রণক্ষেত্র। সেখানে তাঁদের সরকারের নীতি সমালোচনা করার ও দেশের স্বার্থ লঙ্ঘিত হয় এমন সমস্ত বিষয়ে প্রশ্ন করার ও সরকারের কাছে তথ্য দাবি করার পূর্ণ অধিকার আছে। সেই অধিকার কে যদি বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে হরণ করতে চায় তাহলে সেটা হবে সংবিধানের বিরুদ্ধে ও সংসদীয় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ ঘোষণা। 

বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীরা চিরকালই যে কোনো ধরণের বিরোধী স্বরের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ তোলেন। এখন আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যে মৈত্র কে আক্রমণ করে ও নিজের দলের দোষীদের আড়াল করে বিজেপি কি আরও একবার প্রমাণ করছে না যে তাদের সম্পর্কে সমগ্র বিরোধী শিবিরের অভিযোগ কত প্রাসঙ্গিক?

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla