কোভিড-১৯ এর প্রায় এক দশক আগে পৃথিবী দেখে নিয়েছে একবিংশ শতাব্দীর আরেক অতিমারী সোয়াইন ফ্লু’ কে। বিজ্ঞান যতক্ষণ পর্যন্ত একটি রোগের পুরোপুরি আগাপাশতলা উদ্ধার করতে অক্ষম, যতক্ষণ রোগের গতি প্রকৃতি নিয়ে প্রতিটি নিখুঁত তথ্য আবিষ্কার হচ্ছে, হাতের কাছে প্রতিষেধক বা ওষুধ আসছে বা রোগটি তার মারণ ক্ষমতা হারাচ্ছে, ততক্ষণ বলাই বাহুল্য আতঙ্ক অবশ্যম্ভাবী।
২০০৯ সালে এই সমাগত প্রায় ধ্বংস থেকে জগৎ সংসার কে বাঁচিয়ে দিতে ঔষধ প্রস্তুতকারী জগতের দানব “রোসে” কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসে সোয়াইন ফ্লু-র অব্যর্থ ওষুধ – ট্যামিফ্লু। তারপর যা হওয়ার তাই হয়। মুক্তির আনন্দে আক্রান্ত দেশগুলি টন টন ট্যামিফ্লু কিনে পাহাড় বানিয়ে ফেলে। ব্রিটেন এই ওষুধ কিনতে খরচ করেছিল আনুমানিক ৫০ কোটি পাউন্ড, ভারত খরচ করেছিল ৬০০ কোটি টাকা।
এই প্যানিক বাইং বা আতঙ্কের খরিদের কিছুকাল পরেই জানা যায় যেসব পাহাড় প্রমাণ দাবী নিয়ে ট্যামি ফ্লু বাজারে ঢুকেছিল তার প্রায় পুরোটাই ঢপ। যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা গবেষণামূলক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে রোসে এই দাবীগুলি সামনে নিয়ে এসেছিল সেই ট্রায়ালও ধোঁয়ায় ঢাকা, ওষুধ সম্পর্কিত অনেক তথ্যই হয় রোসে বেমালুম চেপে গেছে অথবা, যে তথ্য গুলো সামনে নিয়ে এসেছে ওষুধ বিক্রির জন্য , সেসবের আদৌ যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এই মহামারী, এই ভয় – আসলে রোসের জিয়ন কাঠি।
বিশ্বের তাবড় ওষুধ কোম্পানি গুলির এই ছক শুধুমাত্র মহামারীর জন্য নয় বা রোসেও দুধের সাগরে এক ঘটি জল মাত্র নয় মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে আমাদের চোখের সামনে ও আড়ালে প্রতিটি মুহূর্তে এই কেলেঙ্কারির মহাকাব্য লেখা হয়ে যাচ্ছে। ভারতে এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যখাতে মানুষের মোট যে খরচ তার প্রায় ৭০% যায় আউটডোর বা বহিঃবিভাগ-ভিত্তিক রোগীর ওষুধ কেনার পিছনে। অতএব, স্বাস্থ্য, যা হওয়ার কথা ছিল মানুষের মৌলিক অধিকার, তথাকথিত মুক্ত বাজারের কল্যাণে যা অবধারিত ভাবে পরিণত হয়েছে একটি ইন্ডাস্ট্রিতে বা বাণিজ্যে, ওষুধ এখন সেই ইন্ডাস্ট্রির সোনার ডিম পাড়া হাঁস।
গত কয়েক দশকে কর্পোরেট গণতন্ত্রের লাফালাফির সুবাদে রাষ্ট্রীয় অনুদানে চলা ওষুধের গবেষণা যখন প্রায় ফসিল হয়ে এসেছে, সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে বিশ্বের তাবড় তাবড় ওষুধ কোম্পানিগুলি। ফল? যে কোম্পানি ওষুধ বানাচ্ছে তারাই ট্রায়াল চালাবে, ট্রায়ালের ফল পছন্দ না হলে তার তথ্য লুকিয়ে ফেলা হবে, সেই গোপন তথ্য ভান্ডারের প্রবেশাধিকার কারোর থাকবে না, ওষুধের উৎপাদন মূল্যের প্রায় দুই-তিন গুণ তার মার্কেটিং এর পিছনে খরচ করে ডাক্তার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর কাজটি নিশ্চিন্ত করা হবে এবং মানুষ চা বিস্কুট খাওয়ার মত এলোপাথাড়ি প্যান্টোপ্ৰাজোল আর স্ট্যাটিন গিলবে।
অবশ্য পরীক্ষার রেজাল্ট সন্তোষজনক না হলে সেটিকে চাপা দিয়ে দেওয়ার অভ্যেস বিজ্ঞানের প্রায় সবকটি শাখাতেই কমবেশী গ্রহণযোগ্যতা তৈরী করে ফেলেছে। কিন্তু এই বাকি শাখা গুলির থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবথেকে বড় তফাৎটা এইখানে যে মানুষের জীবন নিয়ে টানা-হ্যাচড়াটি এখানে সরাসরি হয়। তাই গবেষণার স্ট্যান্ডার্ড হোক বা গবেষণা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ –এসবের এথিক্যাল দায় এখানে প্রচন্ড বেশী। অন্তত, তাই হওয়ার কথা। কিন্তু ব্যবসা বড় বালাই। বিশ্বের প্রায় কয়েক হাজার কোটির ওষুধ শিল্প সকাল বিকাল নৈতিকতা কে যে হারে কাঁচকলা দেখিয়ে আসছে তা নিয়ে একটি কয়েকশ পাতার দুর্ধষ থ্রিলার অনায়াসে নামিয়ে দেওয়া যায়।
একটি ওষুধ ল্যাবরেটরি থেকে মার্কেটে আসার মাঝে তাকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বা মানুষের উপর পরীক্ষার চারটি ধাপ পাশ হয়ে আসতে হয়। এই ট্রায়ালের ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই ওষুধের কার্যক্ষমতা ও শরীরের উপর অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিবেচনা করা হয় এবং শেষমেশ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওষুধটি বাজারে আসার যোগ্য কিনা। বাস্তবে প্রায়শই ট্রায়ালের ফলাফল জাল করার মাধ্যমে ওষুধের কার্যক্ষমতা নিয়ে অত্যুক্তি করা হয়[i], অথবা কোনো দুর্বল প্রতিযোগীর সাথে নতুন ওষুধটির ক্ষমতা তুলনা করে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আঙুল থেকে কলাগাছ বানানো হয়[ii]।
এসবের পরও যদি কোনো ট্রায়ালের রেজাল্ট পছন্দ না হয়, বা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য ওষুধের বাজার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে সেইসব রিপোর্টের আর দিনের আলো দেখা হয় না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ট্যামিফ্লু সংক্রান্ত ট্রায়াল রিপোর্ট গুলির মধ্যে দুই তিনটে ছাড়া বাকি গুলো এখনো জনসমক্ষে আসেনি।
১৯৯৯ সালে গ্লাক্সো স্মিথক্লাইন বা জিএসকে বাজারে নিয়ে আসে ডায়াবেটিসের মহৌষধ রোসিগ্লিটাজন, কয়েক বছরের মধ্যেই বাজারে সুপারহিট হয়ে সেই ওষুধ বছরে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের ব্যবসা করতে শুরু করে। পরে যখন হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি বাড়ানোর কারণ হিসেবে এই ওষুধ নিষিদ্ধ হয়, তার মাঝে এক দশক পেরিয়ে গেছে। শোনা যায় প্রথম এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন নর্থ ক্যারোলিনা ইউনিভার্সিটির চিকিৎসক অধ্যাপক জন বুস, তিনি নাকি সকাল সন্ধ্যে জিএসকে-র থ্রেট খেতেন।
একইভাবে বলা যায় মার্ক (Merk) এর ভায়োক্স এর কথা, যা ব্যাথা নিবারণকারী হিসেবে বাজারে আসে এবং এই একই হৃদরোগ সংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে নিষিদ্ধ হয়। প্রসঙ্গত, ভায়োক্স এর প্রস্তুতকর্তা মার্ক কোম্পানি এই ওষুধের মার্কেটিং এর পিছনে এক বছরে খরচ করেছিল ১৬ কোটি ডলার, যা ওষুধ মার্কেটিং-এর জগতে একটি রেকর্ড বিশেষ।
মার্ক এর কথায় মনে পড়ল, ওষুধ শিল্পের ঘুণপোকা যখন চিকিৎসার জগৎকে এতটাও ব্যতিব্যস্ত করে তোলেনি, সে আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগের কথা, মার্ক এর ভবিষ্যৎদ্রষ্টা চিফ একজিকিউটিভ হেনরি গ্যাডসডেন বলে গিয়েছিলেন ওষুধ কেন শুধুই রোগীরা খাবে? তিনি চেয়েছিলেন ওষুধ হবে চুইং গামের মতন, যা সুস্থ অসুস্থ নির্বিশেষে সবাইকে বিক্রি করা যায়। প্রায় এই সময়ই বিশ্বের এক ঐতিহাসিক পট পরিবর্তনের সমাপতন লক্ষণীয়।
১৯৩০ এর পর ১৯৭০ এ আবার একটি great depression এর কবলে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। ফলত ১৯৩০ এর পর থেকে যে তথাকথিত জনকল্যাণকর রাষ্ট্র এতদিন চলে আসছিল, তার ভবিষ্যৎ বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে পড়ে যায় এবং ক্রমশ এই জনকল্যাণকর রাষ্ট্রকে সরিয়ে তার জায়গা নিতে থাকে নয়া-উদারনৈতিক অর্থনীতি।
এতদিন পর্যন্ত যেখানে জনগণের স্বাস্থ্যের প্রশ্নটি অনেকটাই সামলে আসছিল রাষ্ট্র, তার জায়গায় রাষ্ট্র ক্রমশ হাত গুটিয়ে নিতে শুরু করে এবং পরিবর্তে সেখানে নিজেকে সর্বেসর্বা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে মুক্তবাজার। মোটামুটি এইসময় থেকেই শুরু হয়ে যায় সুচারু ভাবে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ওষুধের সাথে অসুখ কে বিক্রি করার একটি নিরন্তর প্রয়াস।
যার ফল এতদিনে আমাদের কাছে এতটাই প্রকট যে তাকে বিশ্লেষণ করার জন্য আলাদা করে সমাজবিজ্ঞানীর প্রয়োজন পড়ে না। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ও তুচ্ছ ঘটনা, রোগা থেকে মোটা হওয়া, বয়সের সাথে মুখের বলিরেখা পড়া, পিরিয়ডের সময়কালীন মেজাজ পরিবর্তন, নারীর যৌন শীতলতা, মোটকথা প্রায় গোটা জীবনকেই ধীরে ধীরে এনে ফেলা হল ওষুধের আওতায়।
স্বভাব-লাজুক মানুষদের বলা হল এটি সামাজিক-আতঙ্ক এবং হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল ওষুধ । অসুখ সম্পর্কে সাধারণ ধারণায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার জন্য এই বহুজাতিক কোম্পানিগুলি ঠিক কতটা মরিয়া তা বোঝার জন্য একটি উদাহরণ দিই, ২০০৩ সালে ফয়জার (Pfizer) একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে যাতে দেখা যায় মর্গে শুয়ে থাকা একটি লাশ, সাথে ক্যাপশন “A simple test of blood cholesterol could have avoided this” (একটি সাধারণ রক্তের কোলেস্টেরল পরীক্ষা এটা এড়াতে পারতো”)। প্রসঙ্গত, কোলেস্টেরল হার্ট এট্যাকের অনেকগুলি রিস্ক ফ্যাক্টরের মধ্যে একটি, কিন্তু শুধুমাত্র কোলেস্টেরল নিয়েই এই অহেতুক লাফালাফি দিয়ে মানুষকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার পিছনে কারণটি স্পষ্ট – কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ বাজারে বিক্রি হয়।
এই নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারের প্রেক্ষিতে শেষমেষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও বিবৃতি দিতে হয়েছিল এই বলে যে “To us, the implication is that smokers, obese individuals, or those who live a sedentary lifestyle can safely continue to smoke, remain overweight, or take little exercise, provided they take medication to reduce their cholesterol values.” (“আমাদের কাছে নিহিতার্থ হল যে ধূমপায়ীরা, মেদবহুল মানুষেরা, বা যাঁরা একটু অলস জীবনযাপনে অভ্যস্ত, তাঁরা ধূমপান চালিয়ে যেতে পারেন, স্থূল হয়ে থাকতে পারেন, অল্প ব্যায়ামও করতে পারেন যদি তাঁরা কোলেস্টেরল কমানোর জন্যে ওষুধ খান”)।
এইখানে একটি সহজ প্রশ্ন তোলা যায় যে, একটি কোম্পানী কে তার ওষুধের বিজ্ঞাপনের জন্য তার আয়ের প্রায় ৩৫%খরচ করতে হয় কেন[iii]? ব্র্যান্ডেড জামা জুতো ও অন্যান্য পণ্যের সাথে ওষুধের তফাৎ এটাই যে এখানে আলোচ্য বস্তুটির একটাই কাজ, রোগীর যন্ত্রণার উপশম। সেখানে তার প্রচারের জন্য যদি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ওড়াতে হয়, তাহলে তার পেছনে যে স্বাভাবিক প্রবৃত্তিটি ধরা পড়ে তা হল অসুখ ও ওষুধ সম্বন্ধে ডাক্তার ও রোগীর সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করা এবং অবশ্যই বিকৃত করা।
এরই সাথে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে প্রোটোকল দিয়ে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে তাকে জুড়ে দেওয়া হল Consumer Protection Act এর সাথে। ফলে যেভাবে বাড়ছিল সুস্থ অথচ উদ্বিগ্নের সংখ্যা, তারই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ল ডাক্তারের মেডিকোলিগ্যাল বা চিকিৎসা-সংক্রান্ত আইনি মামলার উদ্বেগ। দুয়ের মাঝখানে প্রতি বছর চক্রবৃদ্ধি হারে আকাশ ছুঁতে থাকল প্রেসক্রাইবড ড্রাগ আর ইন্টারভেনশনের খরচ।
শেষ করার আগে এইখানে একটি কথা বলা যাক। স্বাস্থ্য আমাদের অধিকার এই দাবী ঠিক কতটা অকাট্য তা বোঝানোর জন্য আজ আর নতুন কোনো থিওরির প্রয়োজন নেই। স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্রিক হবে না রোগী কেন্দ্রিক সেই নিয়ে একটি তর্ক বহুদিন ধরে চলে আসছে, এমনকি কর্পোরেট পুঁজি ও সেই পুঁজির , লালিত সরকার, স্বাস্থ্য যে আদতে curative এবং তা শেষমেশ বাজারেই কিনতে হয় এই কথাটি পাখিপড়ার মত আমাদের শিখিয়ে এসেছে বহুদিন ধরে।
তারপরও সবার জন্য স্বাস্থ্যের দাবী বারবার উঠে এসেছে, ভবিষ্যতে আবার উঠবে, যে দাবী অনেকবারই দু-একটি ফুলকি ছড়িয়ে নিভে গেছে, সেই দাবী থেকেই একদিন আগুন জ্বলবে, আশা রাখি। শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক কেন কতখানি অপরিহার্য সেই সত্যের সামনে করোনা আমাদের ঘাড় ধরে আরেকবার দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সেই রাস্তায় না এগোলে বার বার এই তিক্ত সত্যের সামনে মাথা নীচু করে না দাঁড়ানো ছাড়া আমাদের কোনো রাস্তা খোলা নেই। কিন্তু এরই সাথে বিশ্বায়িত কর্পোরেট ইন্ডাস্ট্রি থেকে রোগ, রোগী এবং চিকিৎসা নিয়ে ধারণা কে তাদের সুবিধামত ছাঁচে ঢালার যে চেষ্টা প্রতিনিয়ত চলে আসছে তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রয়োজনটাও আজ অস্বীকার করার জায়গায় নেই এবং প্রথম চ্যালেঞ্জটি করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে চিকিৎসক সমাজকেই। এইমুহূর্তে কাজটি ভালোরকম কঠিন, নিঃসন্দেহে। কিন্তু এই কর্পোরেট বিষবৃক্ষের সাথে সহাবস্থান করে আর যাই হোক, সবার জন্য স্বাস্থ্য সেই সোনার পাথরবাটিই।
তথ্যসূত্র:
1) Bad Pharma : How Drug Companies Mislead Doctors and Harm Patients – Ben Goldacre
2) Selling Sickness : How the World’s Biggest Pharmaceutical Companies are Turning us All into Patients – Ray Moynihan and Alan Cassels
নোট
[i] Safer DJ Design and reporting modifications in industry – sponsored comparative psychopharmacology trials. J Nerv Ment Dis 2002 Sep; 190(9):583-92.
[ii] Lexchin, pharmaceutical research sponsorship and research outcome and quality : systematic review, BMJ 2003:326.
[iii] Reinhardt UE. An information infrastructure for the pharmaceutical market. Health Aff (Millwood) 2004; 23(1):107-12.
Dr. Dey, if you are a physician do you prescribe tea-biscuit for your patients.
Another conspiration theory – GREAT!