Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wpau-yt-channel domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-designer-pack domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u872615695/domains/peoplesreview.in/public_html/bangla/wp-includes/functions.php on line 6114
উত্তর প্রদেশে সেনা জওয়ান দ্বারা ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনা প্রশ্নের মুখে তুলছে রক্ষাকারীদেরই | পিপলস রিভিউ বাংলা - People's Review Bangla

উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগরে এমএ প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে বাড়িতে ছেড়ে দেওয়ার অজুহাতে আটক করে টানা দুই দিন গণধর্ষণ করা হয় দিল্লীর এক আবাসনে। সেই ছাত্রী দুই দিন বাদে কোনো রকমে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে বাঁচেন সেখান থেকে। 

ধর্ষিতা ছাত্রীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩রা মার্চ তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার অজুহাতে এক সেনা জওয়ান গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় দিল্লীর এক আবাসনে। সেখানে তাঁকে ৪৮ ঘন্টা বন্দী করে গণধর্ষণ চালানো হয়, বাঁধা দিতে গেলে করা হয় বেধড়ক মারধর ও যৌন নির্যাতন।  

ঐ সেনা জওয়ানের সাথে যোগ দেয় তার আরও চার বন্ধু। অভিযোগ অনুযায়ী, মূল অভিযুক্ত ছাত্রীর গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে। তারা একে অপরের পরিচিত। টানা দুই দিন অকথ্য অত্যাচার সহ্য করার পর ছাত্রীটি কোনো রকমে, চরম শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করেও, পালাতে সক্ষম হয় শুধু মনের জোরে আর উপস্থিত বুদ্ধি ব্যবহার করে। 

সূত্র মারফত জানা যায়, এই সেনা জওয়ানের বয়স ২৪ বছর। তিনি ২০২০ সালে ভারতীয় সেনায় নিযুক্ত হন ক্রীড়া কোটার মাধ্যমে। এখন তার পোস্টিং ফতেহগড়ে। 

ধর্ষিতা ছাত্রী গত শনিবার, ৫ই মার্চ, খাতাউলি থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (এফআইআর) দায়ের করে। ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) ধারা ৩৭৬-ডি অনুযায়ী, গণধর্ষণের মামলায় পুলিশ মামলা রুজু করেছে, মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে।  

“প্রকৃত দোষীদের ধরার জন্য একটি দল গঠন করা হয়েছে, মূল অভিযুক্তদের খুব তাড়াতাড়ি ধরা হবে” বলে এমনই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে ধর্ষিতা ছাত্রী ও তার পরিবারকে। ছাত্রীকে বর্তমানে মেডিকেল টেস্টে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ মেডিকেল রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে, জানিয়েছেন খাতাউলি থানার স্টেশন হেড অফিসার (এসএইচও) ধর্মেন্দ্র কুমার। 

এই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গেছে ভারতীয় সেনার ‘দেশপ্রেম’ প্রসঙ্গে। কেউ কেউ আবার কাশ্মীর-মণিপুরে ঘটে যাওয়া সেনাদের গণধর্ষণের ঘটনাকে তুলে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, ভারতীয় জওয়ানদের ‘রেপ কালচারাল’ প্র্যাকটিস নিয়ে! কেউ কেউ আবার বলছে দেশের রক্ষাকারীরা যদি এমন কাজ করে তবে মানুষ ভরসা করবে কাকে? বিপদে পড়লে যাবে কার কাছে? 

উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে ইতিহাসে নাম তুলে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পুনরায়  সরকার গড়তে চলেছে। ক্ষমতায় আসতে না আসতেই আবার এমন ঘটনা যোগীর বিজেপি সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে চলেছে বলেই একাংশের ধারণা। যদিও ভোট হয়ে যাওয়ার ফলে বিরোধীরা এই ইস্যু নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। 

এর আগে ঘটে যাওয়া হাথরাসের সেই ভয়াবহ দলিত কিশোরীর গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সারা দেশের মানুষের মধ্যে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, যার ফলে রাজ্য সরকার বাদেও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার ও বিজেপির পিতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘও চরম তিতিবিরক্ত হয়েছিল।  

বহুদিন যাবৎ, হাথরাসের গণধর্ষণের ঘটনা কে তুলে ধরে উত্তর প্রদেশে ও নানা রাজ্যে বিজেপির বিরোধীরা (বিশেষ করে ভোটের আগে) নিজেদের যাবতীয় কুকর্মকে ঢাকার কাজ করেছে। নানা রাজ্যে আবার উত্তর প্রদেশের “অরাজকতার” বাহানা দিয়ে নিজ নিজ পুলিশের সন্ত্রাস কে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস কে ঢাকার চেষ্টা করেছে। 

বর্তমানে এই গণধর্ষণের ঘটনার কতটা সঠিক তদন্ত হবে তা নিয়ে বিস্তর কাটাছেঁড়া চলছেই। যোগী সরকার তার রাজ্যকে ‘সন্ত্রাস মুক্ত’ রাজ্য হিসেবে প্রচার করলেও জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) ২০২০ রিপোর্ট অনুযায়ী উত্তর প্রদেশ ২,৭৮৯টি ধর্ষণের কাণ্ডে সারা ভারতে দ্বিতীয় স্থানে এবং হত্যার ঘটনায় ২৯,১৯৩টি ঘটনা নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।  

২০২০ সালের এনসিআরবি রিপোর্ট আরো জানাচ্ছে যে ২০১৩ সালের পরে, ২০১৯ সমীক্ষায় ৫৯,৮৫৩টি ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আইনী প্রক্রিয়া এখনো বকেয়া রয়েছে। যার ফলে অভিযুক্তরা কোনো আইনী শাস্তি পায়নি এখনো। 

এই দিকে পশ্চিমবঙ্গে বাড়িতে ঢুকে বাবার মাথায় বন্দুক ধরে ছেলেকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে হত্যা করার দায়ে চারজন অজ্ঞাতপরিচয়ের পুলিশ অভিযুক্ত হওয়ার পরেও ২০ দিনেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায়, হত্যাকারীদের শাস্তি না হওয়ায়, এবং উত্তর প্রদেশের সেনা জওয়ান ও পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলের বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে গণধর্ষণ, সারা দেশের মানুষের সামনে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে।  

আইনের রক্ষাকর্তাদের দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও দেশের ‘গণতন্ত্রের’ প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর সাথে প্রশ্ন উঠছে, প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে, যে পুলিশ-সেনা জওয়ানরা নিজের দেশেরই, তাদের নিজেদের ভাই-বোন বা সন্তানদের প্রতি কেন এই রকম অমানবিক আচরণ করছে? কেন তারা দিনদিন  ‘নরখাদক’ হয়ে যাচ্ছে?  

তাহলে সরকার কি তাদের উপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে, যার দরুন তাদের মধ্যে খুন, ধর্ষণের মতন অপরাধ করার মতন হিংসাত্মক মানসিকতা জন্ম নিচ্ছে? যা সমাজকে রক্ষা করার বদলে আরো বিপাকে ঠেলে দিচ্ছে। এর পরিণাম কিন্তু আগামী দিনে আরও ভয়ানক হতে পারে ও বারবার এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান কে জনতার প্রশ্নের সম্মুখীন করতে পারে। 

এই প্রবন্ধটি কি আপনার ভাল লেগেছে?

তাহলে মাত্র ৫০০ ভারতীয় টাকার থেকে শুরু করে আপনার সাধ্য মতন এই ব্লগটি কে সহযোগিতা করুন

যেহেতু আমরা FCRA-তে পঞ্জীকৃত নই, অতএব ভারতের বাইরের থেকে সহযোগিতা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

CAPTCHA


পিপলস রিভিউ বাংলা – People's Review Bangla